বরুণ গাঁধী।
বরুণ গাঁধীকে বিজেপিতে আনার সময় প্রয়াত প্রমোদ মহাজনের অঙ্ক ছিল, তিনি লাগাতার নিশানা করবেন সনিয়া-রাহুল-প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে। তাতেসুবিধা হবে বিজেপির। কিন্তু বিজেপিতে এলেও জেঠতুতো দাদা-দিদি রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে আক্রমণ করতে কখনওই সে ভাবে রাজি হননি বরুণ। বরং সঞ্জয়-পুত্রের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কাদের সুসম্পর্কের কথাই শোনা গিয়েছে বারবার। যার ফলে বারবার এমন জল্পনাও উঠে এসেছে— বিজেপিতে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়া বরুণ কি তা হলে কংগ্রেসে যোগ দেবেন?
আজ সেই বরুণের মুখেই উল্টো সুর! সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরোধিতা করে রাহুল-প্রিয়ঙ্কারা প্রতিদিন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে তোপ দাগছেন। মোদী-শাহের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপির সাংসদ বরুণ এ বার রাহুল-প্রিয়ঙ্কার বিরুদ্ধেই মুখ খুললেন। পরোক্ষে আক্রমণ করলেন জেঠিমা সনিয়াকেও।
এবিপি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বরুণকে প্রশ্ন করা হয়, সিএএ সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে, তাই ক্ষমতায় এলে ওই আইন প্রত্যাহারের কথা বলেছেন প্রিয়ঙ্কা। আপনার কী মত? বরুণের জবাব, ‘‘মোদী-অমিত শাহের বিরোধ করতেই পারেন। কিন্তু তাঁদের বিরোধ করতে করতে দেশের বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়ে না পড়েন! ভবিষ্যৎ প্রজন্ম প্রশ্ন করলে জবাব দিতে হবে— তাঁরা দেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন, না নিজেদের লাভের জন্য কিছু নীতির পাশে? যাঁরা রাজনীতি করছেন, তাঁদের ৯৯.৯ শতাংশ আইন পড়েননি।’’ তার মানে কি? আইন না পড়েই প্রিয়ঙ্কারা আন্দোলনে নেমেছেন? বরুণের জবাব— ‘‘আমার সেটাই স্পষ্ট মত।’’
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাহুলের ‘ফ্যাসিবাদ’ শব্দ প্রয়োগেও ঘোর আপত্তি ‘বিজেপির গাঁধী’র। বরুণের মতে, ‘‘এটি নোংরা মন্তব্য। দু’-দুবার আরও বেশি সংখ্যা নিয়ে জিতে আসা সরকারের সঙ্গে জার্মানির তুলনা? ইতিহাস হয়তো জানেন না, বা জেনেও মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। নোটবন্দির পরেও প্রচার হয়, দেশের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনেই মানুষ জবাব দিয়েছে।’’
উত্তরপ্রদেশের নজির উঠতেই প্রশ্ন ওঠে সাম্প্রতিক ঝাড়খণ্ড বা অন্য রাজ্যে বিজেপির হারের কারণ নিয়ে। উত্তর দিতে গিয়ে পরোক্ষে জেঠিমা সনিয়াকেও বিঁধলেন বিজেপি সাংসদ। তাঁর মতে, ‘‘আসলে বিজেপির প্রতি প্রত্যাশা এত বেশি, প্রতিবার একশোতে ৯৯ না পেলে বলা হয় ভাল ফল হয়নি। আর বেচারি বিরোধীরা ৪০ পেলেও মা বলেন ‘বেটা অনেক ভাল করেছো, পাশ তো করেছো।’’