ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী নিজেদের ইচ্ছা-তালিকা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। প্রতীকী ছবি।
নির্বাচন ঘনিয়ে এলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নেতা নিজ নিজ জাতপাতের সমীকরণ খুঁজতে শুরু করেন। নিজের ভোটব্যাঙ্ককে ভোটের আগে তুষ্ট করার নজিরও যথেষ্ট। কিন্তু এ বার দেখা যাচ্ছে উলটপুরাণ! নতুন বছরে কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান-সহ দশটি বিধানসভার ভোট। দেখা যাচ্ছে, ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী নিজেদের ইচ্ছা-তালিকা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ভোটের মুখেই সরকার বা শাসক দলকে চেপে ধরে বা বিরোধিতা করে নিজেদের দাবি-দাওয়া তারা মেটাতে চাইছে। এ ভাবে ভোটের মুখে সওদা করে নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ, এটা ক্রমশ বুঝতে পারছে এই গোষ্ঠীগুলি।
গত সপ্তাহে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে রাজপুত সম্প্রদায়ের একটি বড় গোষ্ঠী করণী সেনা একটি বিরাট প্রতিবাদ মিছিল এবং জনসমাবেশ করেছে শহর জুড়ে। তাদের প্রতিবাদ শিবরাজ সিংহ চৌহানের নেতৃত্বাধীন মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে। এই গোষ্ঠীর দাবি অর্থনৈতিক সক্ষমতার ভিত্তিতে সংরক্ষণ দিতে হবে সরকারকে। সব মিলিয়ে মোট বাইশটি দাবির তালিকা তুলে ধরে সেনা বলেছে এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে যত ক্ষণ না সরকার কর্ণপাত করে। এর পরে মধ্যপ্রদেশ সরকারের এক মন্ত্রী অরবিন্দ সিংহ ভাদোরিয়া করণী সেনা প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করেন। তিনি আশ্বাস দেওয়ার পর আপাতত ধর্না বন্ধ হয়েছে। করণী সেনার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘নির্বাচনের আগে আমরা দাবিকে জোরালো করছি এটা হয়তো ঠিক। কিন্তু এই সব দাবি আমরা গত ১৪ বছর ধরে করে আসছি।’’
পাশাপাশি রাজস্থান সরকার গত সেপ্টেম্বরে তফসিলি জাতি-জনজাতিদের জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসার কথা ঘোষণা করে। এর পরেই রাজ্যে আন্দোলনে নেমেছে গুর্জর আরক্ষণ সংঘর্ষ সমিতি। সমিতির পক্ষ থেকে রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে হুমকি দেওয়া হয়, এই তালিকায় অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিকে যুক্ত না করা হলে, রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার প্রবল বিরোধিতা করা হবে রাজ্যে। শেষ পর্যন্ত এই চাপের কাছে নতি স্বীকার করে রাজ্য সরকার সমিতির দাবি মেনে নেয়। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, শুধু রাহুল গান্ধীর যাত্রাই নয়, তাদের হিসাবে রয়েছে এই বছরের বিধানসভা ভোট।
কর্নাটকে পঞ্চমাশালি লিঙ্গায়েত সম্প্রদায় (উচ্চ শ্রেণির) সম্প্রতি বেলাগাভি শহরে (মহারাষ্ট্র সীমানার কাছে) বিরাট প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু করেছে। এই সম্প্রদায়ভূক্ত বিজেপি বিধায়ক বসনগৌড়া পাটিল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দাবি, শিক্ষা এবং চাকরির ক্ষেত্রে লিঙ্গায়েতের সংরক্ষণ। বিষয়টিকে রাজ্য সরকার অগ্রাহ্য করতে পারছে না কারণ রাজ্যের জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ পঞ্চমাশালি লিঙ্গায়েত। অনেকগুলি আসনে তাঁদের প্রভাব রয়েছে।