ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ভারভারা রাও
ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ভারভারা রাওকে ৬ মাসের জন্য জামিন দিল বম্বে হাইকোর্ট। শারীরিক কারণে অশীতিপর কবির জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত।
সোমবার ভারভারার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি এস এস শিন্দে এবং বিচারপতি মণীশ পিটালের বেঞ্চ। তবে জামিন মঞ্জুর করলেও ভারভারার উপর বেশ কয়েকটি শর্ত আরোপ করেছে আদালত। আদালতের নির্দেশ, আগামী ৬ মাস মুম্বইয়ের বাইরে যেতে পারবেন না ভারভারা। পাশাপাশি, তদন্তের প্রয়োজনে তলব করলেই হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। আদালতের মন্তব্য, ‘‘ভারভারা রাও তাঁর বাড়ির ঠিকানা-সহ যাবতীয় তথ্য বিশদে জানাবেন। শুনানির প্রয়োজনে যখনই তলব করা হবে, হাজির থাকতে হবে। তবে সশরীরে হাজিরা দিতে না পারলে আদালতের কাছে আবেদন করতে হবে তাঁকে। এ ছাড়া, হোয়াট্সঅ্যাপে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে নিকটস্থ থানায় তাঁর উপস্থিতি দেখাতে পারবেন।’’ ভারভারার জামিনের জন্য বম্বে হাইকোর্টে ২টি আবেদন জমা পড়েছিল। একটি ভারভারার তরফে এবং অন্য আবেদনটি করেছিলেন তাঁর স্ত্রী পি হেমলতা।
ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ২০১৮ সালের অগস্ট থেকে জেলে বন্দি ভারভারা। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে একাধিক মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ওই বছর থেকেই মহারাষ্ট্রের তালোজা জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। জেলে থাকাকালীন অশীতিপর ভারভারার শারীরিক অবস্থার ক্রমশই অবনতি হচ্ছিল বলে বার বার দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী। এ নিয়ে ভারভারার সাংবিধানিক অধিকারও খর্ব করা হয়েছে বলেও সরব হয়েছিলেন তিনি। জেলবন্দি অবস্থায় কোভিডেও আক্রান্ত হয়েছিলেন ভারভারা। তাঁর আইনজীবীদের অভিযোগ, ভারভারার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও তাঁর ঠিক মতো চিকিৎসা করানো হচ্ছে না। তাঁর মুক্তির দাবিতে একাধিক বার আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। শারীরিক কারণে জেলবন্দি অবস্থাতেই একাধিক বার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভারভারাকে।
জামিনের শুনানির সময়ও তিনি মুম্বইয়ের নানাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তাঁকে অবিলম্বে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকা এবং মাওবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে প্রবীণ অধ্যাপক এবং কবি ভারাভারা রাওকে ২০১৮ সালের ২৮ অগস্ট গ্রেফতার করে পুণে পুলিশ। পরের বছর ওই মামলার চার্জশিটে দাবি করা হয়েছিল, ’১৮-র জানুয়ারিতে ভীমা কোরেগাঁওয়ে দলিত বিজয়দিবস অনুষ্ঠানে ব্যাপক গন্ডগোলের পিছনে ভারভারা ছাড়া আরও ৪ জন সমাজকর্মী জড়িত ছিলেন। তাঁরা হলেন, ট্রেড ইউনিয়ন নেত্রী তথা আইনজীবী সুধা ভরদ্বাজ, অরুণ ফেরেরা, ভার্নন গঞ্জালভেস এবং গৌতম নওলাখা। ভারভারার পাশাপাশি ওই মামলায় নওলাখাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই মামলার তদন্তে নেমে মাওবাদীদের একটি চিঠি পাওয়ার দাবি করে পুলিশ জানায়, তাতে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের উল্লেখ ছিল। ওই চিঠিতে ভারাভারার নাম ছিল বলেও দাবি করেছিল পুলিশ। এই ঘটনায় দেশ জুড়ে নাগরিক সমাজের একাংশের সমালোচনার মুখে পড়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার।