ছবি: সংগৃহীত।
সিপিএমের প্রবীণ নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দন মনে করেন, দল তার নীতি থেকেই সরে যাচ্ছে। এবং সেই জন্যই বারবার ভোটে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। তাঁর মতে, চোখ-কান বুজে মানুষের কাজ করা ছাড়া এই মুহূর্তে সিপিএমের সামনে আর কোনও বিকল্প নেই।
বাংলা থেকে শূন্য হাতে ফেরা, আর কেরল থেকে মাত্র একটি আসনে জেতা সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিকে চিঠি লিখে ৯৫ বছর বয়সি ভিএস জানিয়েছেন, ‘‘এখন কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা আর দলের নীতি বা কর্মসূচির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। তাই তাদের কাজকর্মে পক্ষপাত চলে আসছে।’’ এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে হলে অবিলম্বে ভুল শোধরানো প্রয়োজন বলেও অচ্যুতানন্দন জানিয়েছেন।
লোকসভায় ৫৪৩ আসনের মধ্যে মাত্র ৩টি আসনে জিতেছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ভরাডুবির কারণ খুঁজতে বসে দলের রাজনৈতিক লাইন নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপে জড়িয়ে পড়েছেন। কেরল, ত্রিপুরার নেতারা বলেছেন, বাংলার নেতাদের জন্যই কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তা খুলে রাজনৈতিক লাইন তৈরি হয়েছিল। জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ফলে ওই দুই রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটাররা কংগ্রেসকেই ভোট দিয়েছেন। অথচ বাংলাতেই সিপিএম নেতারা কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করতে পারেননি।
অচ্যুতানন্দন তাঁর চিঠিতে যুক্তি দিয়েছেন, রাজনৈতিক কৌশলের ফলে হার হয়নি। আসলে সিপিএম নিজের দলীয় কর্মসূচি থেকে সরে এসেছে। পার্টির আসল কাজ হল, সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলে, সাধারণ মানুষের মধ্যে গিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করা। তা হচ্ছে না। এর জন্য দলের মধ্যে আত্মসমীক্ষা প্রয়োজন।
সিপিএম নেতারা মনে করছেন, কেরলের প্রবীণ নেতার এই মত বাংলার ক্ষেত্রেও একই রকম প্রযোজ্য। অচ্যুতানন্দন যুক্তি দিয়েছেন, আত্মসমালোচনার পথে হেঁটে দলের কাজকর্ম ঠিক পথে চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। পার্টির মধ্যে শৃঙ্খলার থেকেও রাজনৈতিক শৃঙ্খলা অনেক বেশি জরুরি।
দেশে এখন একমাত্র কেরলেই বাম সরকার। সেই পিনারাই বিজয়নের সরকারও সাধারণ মানুষের বদলে পুঁজিপতিদের সামনে আত্মসমর্পণ করে তাদের জন্যই কাজ করছে বলে অচ্যুতানন্দনের অভিযোগ। কেরলের রাজনীতিতে পিনারাইয়ের সঙ্গে বরাবরই অচ্যুতানন্দনের অহি-নকুল সম্পর্ক। অচ্যুতানন্দনের মতে, কেরলে শ্রমিক-কৃষকদের সঙ্গে কাজ করেই পার্টি মজবুত হয়েছিল। কিন্তু তার বদলে এখন পার্টি আমজনতার স্বার্থবিরোধী অবস্থান নিচ্ছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।