তপোবন বিদ্যুৎপ্রকল্পের সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছেন আইটিবিপি জওয়ানরা। ছবি: পিটিআই।
উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের ঘটনায় এখনও নিখোঁজ ১৯৭ জন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৩২ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। সেনা, আইটিবিপি, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রায় ৬০০ উদ্ধারকারী জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালানোর চেষ্টা করছেন। তবে সবচেয়ে বেশি আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তপোবন বিদ্যুৎপ্রকল্পের সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে।
ঘটনার পর প্রায় ৬০ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গের ভিতরে ঢুকতেই বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। সুড়ঙ্গের মুখ কাদা, পাথরে আটকে গিয়েছিল। উদ্ধারকারী দল সূত্রে জানানো হয়েছে, সুড়ঙ্গের ভিতরে বড় বড় পাথর আটকে থাকায় সেগুলো পরিষ্কার করে ভিতরের দিকে ঢুকতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
সুড়ঙ্গের ১২-১৫ ফুট অংশ ইংরাজি অক্ষরের ‘ইউ’-এর মতো। এই বাঁক থাকায় এবং সুড়ঙ্গে প্রবেশের একটাই মাত্র পথ থাকায় সমস্যাটা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ফলে ভিতরে কেউ আটকে আছেন কিনা তা চিহ্নিত করতে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে আইটিবিপি-র মুখপাত্র বিবেক কুমার পাণ্ডে জানিয়েছেন, সুড়ঙ্গের ভিতরে রাতভর কাদা এবং পাথর সরানোর কাজ হয়েছে। প্রবেশমুখ থেকে ১২০ মিটার পথ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সুড়ঙ্গের প্রায় ছাদ পর্যন্ত ঠেকে যাওয়া কাদা, পাথরের স্তূপের উচ্চতা কমে এসেছে। খুব শীঘ্রই আইটিবিপি-র জওয়ানরা ভিতরে ঢুকতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিবেক। তবে এই কাজ করতে যে যথেষ্ট সমস্যার মুখে পড়তে হবে সেই আশঙ্কাও করেছেন তিনি।
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সুড়ঙ্গের ভিতরে যে পরিমাণ কাদা এবং পাথর জমে গিয়েছে তা পরিষ্কার করতে গিয়ে উদ্ধারকাজের গতি মন্থর হয়ে যাচ্ছে। তবে দ্রুত ভিতরে ঢোকার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
অন্য দিকে, ঋষিগঙ্গার উপর দিয়ে দড়ির সাহায্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামগুলোতে খাবার, জল এবং ওষুধ পৌঁছে দেওয়া শুরু করেছে সেনা, আইটিবিপি-র জওয়ানরা। রবিবারের এই বিপর্যয়ের কারণে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রেনি, পাং, লতা, সুরাইথোটা, সুকি, ভালগাঁও, তোলমা, ফাগরাসু, গহর, লং সেগদি, ভাঙ্গুল, জুগারওয়ার এবং জুগজু গ্রাম। মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়ত বলেন, “আইটিবিপি-র জওয়ানরা পাহাড়ি পথে ৫-৬ কিলোমিটার হেঁটে গ্রামে খাবার, ওষুধ এবং পানীয় জল পৌঁছে দিয়ে আসছেন।”
কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবারই দেহরাদূনের ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অব হিমালয়ান জিওলজি(ডব্লিউআইএইচজি) থেকে বিজ্ঞানীদের দু’টি দল চামোলিতে পৌঁছেছেন।