Joshimath Disaster

জোশীমঠে বাড়িগুলি পর্যবেক্ষণে কেন্দ্রের বিশেষ দল, মুখ্যমন্ত্রী ধামী বললেন, প্রধানমন্ত্রী নজর রাখছেন

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে জোশীমঠ নিয়ে বহু অপপ্রচার হতে দেখা যাচ্ছে। জোশীমঠকে নিয়ে কোনও ভুল ধারণা তৈরি করা উচিত নয়।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

দেহরাদূন শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ১০:৩২
Share:

বুধবার রাতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে জোশীমঠ শহর পরিদর্শনে এসেছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী। ফাইল চিত্র।

সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইন্সটিটিউট (সিবিআরআই)-এর সদস্যরা জোশীমঠের প্রায় চার হাজার বাড়ি পরীক্ষা করে দেখবেন। সিবিআরআই ডিরেক্টর বলেছেন, ওই সব বাড়ি কতটা নিরাপদ, তা মূল্যায়ন করা হবে। যাতে বাড়ির কাঠামো, বর্তমান অবস্থা, বিপদের মাত্রা এবং ভবনগুলির ফাটল সম্পর্কে গভীর ভাবে বোঝা যায়। তিনি বলেন, চিহ্নিত বাড়ির ফাটল পর্যবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন স্থানে ‘ক্র্যাক মিটার’ স্থাপন করা হবে এবং ফাটলের প্রস্থ পরিমাপের ভিত্তিতে ভবনটিতে বসবাস কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তারও মূল্যায়ন করা হবে।

Advertisement

এরই মধ্যে, উত্তরাখণ্ডের উপরিভাগে তুষারপাত হয়েছে। যার জেরে জোশীমঠেরও আবহাওয়া পাল্টে গেল। কেদারনাথ ধাম, বদ্রীনাথ ধাম এবং হেমকুন্ড সাহিবের উঁচু চূড়ায় তুষারপাত হচ্ছে। যার জেরে জোশীমঠেও বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। ঠান্ডা বেড়েছে। ফলে বাড়ি ছেড়ে যে সব বাসিন্দা ত্রাণশিবিরে রয়েছেন, তাঁদের কষ্ট বেড়েছে। পরিস্থিতিও জটিল হয়ে উঠেছে।

বুধবার রাতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে জোশীমঠ শহর পরিদর্শনে এসেছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী। গভীর রাতে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জোশীমঠের ত্রাণশিবিরে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্বর্তিকালীন ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন ধামী।

Advertisement

ধামী জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্যক্তিগত ভাবে পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখছেন। কেউ যেন বিপদের মুখে না পড়েন, সে দিকে নজর দেওয়া হবে বলেও জোশীমঠের বাসিন্দাদের ভরসা জুগিয়েছেন তিনি।ধামীর মন্তব্য, জোশীমঠের ‘মালারি ইন’ নামে সাত তলার একটি হোটেল এবং তার পাশে পাঁচ তলার ‘মাউন্ট ভিউ’ হোটেল দু’টি ভেঙে ফেলার কথা ছিল। কিন্তু যে বাড়িগুলি বিপজ্জনক হিসাবে লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলি অক্ষত থাকবে। ধামী বলেন,‘‘ইতিমধ্যে জোশীমঠকে নিয়ে বহু অপপ্রচার হতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তা একদম সঠিক নয়। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে আউলিতে আন্তর্জাতিক শীতকালীন গেমসের আয়োজন করা হবে। কয়েক মাসের মধ্যে চার ধাম যাত্রাও শুরু হবে। জোশীমঠকে নিয়ে কোনও ভুল ধারণা তৈরি করা উচিত নয়।’’ তাঁর বক্তব্য, উন্নয়নের পথে হাঁটার সময় অর্থনীতি এবং বাস্তুশাস্ত্রের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

ক্ষতিপূরণ নিয়ে ক্ষোভের জেরে বাড়ি ভাঙার কাজে বাধা দিয়েছিলেন জোশীমঠের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে না তাঁদের। এই নিয়ে আলোচনা করতে চামোলি জেলার ম্যাজিস্ট্রেট হিমাংশু খুরানা ১৯ জন সদস্য নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছেন। জোশীমঠের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ধামীর সচিব মীনাক্ষী সুন্দরম আগে জোশীমঠ পরিদর্শনে গিয়ে জোশীমঠের বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন। যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ক্ষতিপূরণের আসল পরিমাণ জিজ্ঞাসা করা হলে সেই বিষয়ে আর কিছু জানাতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রীর সচিব।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন যে, তাঁদের জন্য বদ্রীনাথে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক। বৃহস্পতিবার মু্খ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জোশীমঠের বাসিন্দাদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়। রাজ্য সরকারের তরফে ৪৫ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চামোলি জেলার ম্যা়জিস্ট্রেট ১১ জন সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করেন। যত দ্রুত সম্ভব, এই টাকা জোশীমঠের বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২ জানুয়ারি থেকে শুরু করে বিগত কয়েক দিনে জোশীমঠের ৭৩১টিরও বেশি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। চওড়া চওড়া ফাটল দেখা গিয়েছে সেই শহরের রাস্তা-মন্দির-জমিতে। মাটির তলা থেকে উঠে আসছে অদ্ভুত সব শব্দ। আর সেই আতঙ্কেই রাতারাতি ভিটেমাটি ছাড়া সেই শহরের বহু মানুষ। ঠাঁই হয়েছে আশ্রয় শিবিরে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৩১টি পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে। জোশীমঠকেও বসবাসের অযোগ্য বলে ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement