ছবি সংগৃহীত।
অসমের পরে উত্তরপ্রদেশ। রাজ্যবাসীর উপরে দুই সন্তান নীতি কার্যত চাপিয়ে দেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছে বিজেপি-শাসিত আরও একটি রাজ্য। এই নীতির মোদ্দা বক্তব্য হল, দু’টির বেশি সন্তান থাকলে রাজ্যের দেওয়া সুযোগ মিলবে না।
যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের আইন কমিশন একটি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিলের খসড়া প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, দুই সন্তান নীতি না-মানলে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মিলবে না। রেশন কার্ডের ইউনিট চারে বেঁধে দেওয়া হবে। স্থানীয় ভোটে লড়ার পথও বন্ধ হয়ে যাবে। তা ছাড়া, রাজ্য সরকারের চাকরির আবেদন করা যাবে না। সরকারি কর্মীরা দুই সন্তান নীতি না-মানলে পদোন্নতি চাইতে পারবেন না। তবে দুই বা তার কম সন্তান থাকবে মিলবে নানাবিধ ‘ইনাম’। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই খসড়া বিলে পুরুষ ও নারীর বন্ধ্যাকরণ অস্ত্রোপচারে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে বলে রাজ্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ এন মিত্তল জানিয়েছেন। বন্ধ্যাকরণে পুরস্কারের কথাও বলা হয়েছে বিলে।
‘উত্তরপ্রদেশ জনসংখ্যা (নিয়ন্ত্রণ, স্থিতিকরণ এবং উন্নয়ন) বিল, ২০২১’-এর খসড়া নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে তা নিয়ে মতামত চেয়েছে রাজ্য আইন কমিশন। বলা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশে প্রাকৃতিক ও আর্থিক সম্পদ সীমিত। সবার জন্য খাদ্য, পানীয় জল, বাসস্থান, বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও জীবনধারণের সুযোগের ন্যূনতম বন্দোবস্ত করা জরুরি। যথাযথ বণ্টনের মাধ্যমে স্থায়ী উন্নয়নের স্বার্থেই জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিকরণ প্রয়োজন। খসড়া বিলটি বলছে, দু’টি সন্তানের পরে নিজের বা জীবনসঙ্গীর বন্ধ্যাকরণ অস্ত্রোপচার করিয়ে নেবেন যে সরকারি কর্মীরা, তাঁরা কর্মজীবনে বাড়তি দু’বার বেতন বৃদ্ধির সুবিধে পাবেন। জমি-বাড়ি কিনতে মিলবে সরকারি ভর্তুকি ও অল্প সুদে ঋণ। জল, বিদ্যুৎ বা বাড়ির কর দেওয়ার সময়ে রিবেট পাওয়া যাবে। বাড়তি ৩ শতাংশ ইপিএফের সুবিধে পাওয়া যাবে। জীবনসঙ্গীর জন্য থাকবে নিখরচায় স্বাস্থ্য পরিষেবা ও বিমা। অতিরিক্ত চার বার বেতন বৃদ্ধি হবে। একমাত্র সন্তানের ২০ বছর বয়স না-হওয়য়া পর্যন্ত সে নিখরচায় স্বাস্থ্য পরিষেবা ও বিমার সুবিধে পাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে সে, স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়ার সুযোগ পাবে নিখরচায়। একমাত্র কন্যাসন্তান উচ্চশিক্ষায় বৃত্তি পাবে। সরকারি চাকরি করেন না, এমন আম নাগরিকেরাও দুই বা এক সন্তান নীতি মেনে চললে কার্যত একই রকম সুবিধে পাবেন। বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ, বিশেষ একটি সম্প্রদায়কে নিশানা করতেই বিভিন্ন রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নীতি চাপিয়ে দিচ্ছে বিজেপি।