রাজ্যসভার মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে অখিলেশ যাদবের সঙ্গে কপিল সিব্বল। লখনউয়ে বুধবার। ছবি পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশ বিজেপি যে ভাবে, এসপি কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ করতে শুরু করেছে, তাতে কপিল সিব্বলের মতো এক জন বিচক্ষণ আইনজ্ঞের প্রয়োজন ছিল— বুধবার সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে সিব্বল রাজ্যসভায় লড়ার মনোনয়ন পেশ করার পর বললেন এসপি শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে দলের বক্তব্য, যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা চব্বিশের লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই নেওয়া হয়েছে।
সূত্রের বক্তব্য, কংগ্রেসের সঙ্গে মতান্তর ও বিদ্রোহের পর থেকেই এসপি, আরজেডি, তৃণমূল-সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন সিব্বল। তৃণমূল সূত্রের খবর, সরাসরি দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাবই তাঁরা দিয়েছিলেন কপিলকে। কিন্তু কপিলের দাবি ছিল, কংগ্রেস ছেড়ে কোনও দলে তিনি যোগ দেবেন না। লড়বেন নির্দল প্রার্থী হিসাবেই। রাজনৈতিক ভাবে তাঁর নির্ভরতা এবং আনুগত্য থাকবে কোনও একটি দলের প্রতি। কপিলের যুক্তি ছিল, কংগ্রেস ছাড়ার পরই অন্য দলে যোগ দিয়ে রাজ্যসভায় লড়লে সেটা তাঁর ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকারক। সুযোগসন্ধানীর তকমা পরিয়ে দেওয়া হতে পারে তাঁকে। এসপি-র অখিলেশ যাদব কপিলের শর্তই মেনে নেন।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, আজম খানকে জামিন পাইয়ে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য এসপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব যথেষ্ট কৃতজ্ঞ সিব্বলের উপর। উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগেই আজমকে বের করে আনা যাবে, আশা করছিল দল। কিন্তু অখিলেশ শিবিরের অভিযোগ, একের পর এক মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল, যাতে তিনি রাজনৈতিক ভাবে মাঠে সক্রিয় থাকতে না পারেন। কপিল সেখানে ত্রাতা হয়ে আসেন। তা ছাড়া এসপি-র সহ-সভাপতি কিরণময় নন্দের কথায়, “ধর্মনিরপেক্ষ মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপির সঙ্গে লড়াই করার জন্য উত্তরপ্রদেশে এসপি-র কোনও বিকল্প নেই। কংগ্রেস এবং বিএসপির কোনও অস্তিত্ব এখন আর রাজ্যে নেই। ফলে সিব্বল আমাদের সঙ্গে কথা বলার পরে, তাঁকে স্বাগত জানানো হয়েছে।” প্রথমে ঠিক ছিল, কপিলের আসনটি পাবেন আরএলডি-র জয়ন্ত চৌধুরি। বিধানসভায় তাঁর জোটসঙ্গী জয়ন্তকে সে রকম কথাও দিয়েছিলেন অখিলেশ। কিন্তু সূত্রের খবর, পরে জয়ন্ত জানান, তিনি আরএলডি-র টিকিটেই রাজ্যসভায় যেতে আগ্রহী।
এসপি-র হাতে সংখ্যার হিসাবে রাজ্যসভায় জয়ের জন্য রয়েছে তিনটি আসন। একটি গেল সিব্বলের কোটায়। এ ছাড়া আরও দু’টি টিকিটে লড়বেন দলের প্রাক্তন সাংসদ জাভেদ আলি এবং ডিম্পল যাদব। সূত্রের খবর, কিরণময় নন্দকে এসপি নেতা অখিলেশ জানতে চেয়েছিলেন তিনি রাজ্যসভায় লড়তে ইচ্ছুক কিনা। কিন্তু কিরণময় নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন, তিনি মাঠে থেকে দলীয় সংগঠনের কাজ করতে চান। লোকসভা ভোটের আগে দলকে প্রস্তুত করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে চান।
পশ্চিমাঞ্চলের এসপি নেতা জাভেদ আলি সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠন এআইএসএফ থেকে উঠে এসেছেন। তিনি এসপি-র সদ্য প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদও বটে। তাঁকে দাঁড় করিয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে একটি বার্তা দেওয়া হল। বিধানসভায় এখানে এসপি অনেকগুলি আসন পেয়েছে। ডিম্পল যাদব কনৌজের প্রাক্তন লোকসভা সাংসদ। গত লোকসভা নির্বাচনে তিনি হাজার তিনেক ভোটে পরাজিত হন।