ফাইল চিত্র।
লাস্ট বয়!
জনসংখ্যার নিরিখে সব রাজ্যের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে সব থেকে কম সংখ্যক মানুষের টিকাকরণ হয়েছে। উত্তরপ্রদেশেই সব থেকে কম মানুষ অন্তত এক ডোজ় টিকা পেয়েছেন। দু’ডোজ় টিকা পেয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও উত্তরপ্রদেশেই সব থেকে কম।
কেন্দ্রে মোদী সরকারের মতোই উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির পক্ষে যোগী আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রীর গদি থেকে সরানোর উপায় নেই বুঝে বিজেপির শীর্ষ নেতারা কোভিড মোকাবিলায় যোগীর প্রশংসা শুরু করেছেন। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যান সে কথা বলছে না। যোগী সরকার কোভিডে মৃত্যু রুখতে ব্যর্থ বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল। এ বার দেখা যাচ্ছে, টিকাকরণেও যোগী-প্রশাসন পিছিয়ে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বুধবার পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে প্রতি দশ লক্ষ জনসংখ্যায় মাত্র ৭৫,১৭৬ জন টিকা পেয়েছেন। এই হারে গোটা দেশের মধ্যে সবার শেষে উত্তরপ্রদেশ। প্রথম ডোজ় ও দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকাকরণের ক্ষেত্রেও যোগী সরকার পিছিয়ে। সে রাজ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বের জনসংখ্যার মাত্র ১২.১ শতাংশ প্রথম ডোজ়ের টিকা পেয়েছেন। তা স্পষ্টতই জাতীয় গড় ২০.৫ শতাংশের তুলনায় অনেক কম। যোগীর রাজ্যের মাত্র ২.৫১ শতাংশ মানুষ দু’টি ডোজ়ের টিকা পেয়েছেন। সেখানেও জাতীয় গড় ৪.৮ শতাংশের তুলনায় উত্তরপ্রদেশ অনেক পিছিয়ে। দুই মাপকাঠিতেই যোগী সরকার দেশের মধ্যে শেষ ধাপে।
শুক্রবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যোগীর বৈঠক। বিজেপি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর আস্থাভাজন প্রাক্তন আমলা অরবিন্দ কুমার শর্মাকে যোগীর মন্ত্রিসভায় বসাতে চাইলেও যোগী তাতে আপত্তি তুলছেন। কিন্তু টিকাকরণের পরিসংখ্যান তাঁকে স্বস্তিতে রাখছে না। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন সূত্রের খবর, যোগী নিজেও টিকাকরণ কম হওয়ায় উদ্বিগ্ন। রাজ্যে দিনে গড়ে মাত্র ১.৪ লক্ষ ডোজ় টিকা দেওয়া হচ্ছে।
দিল্লিতে আসার আগে যোগী তাঁর রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, দৈনিক টিকাকরণ ৬ লক্ষে নিয়ে যেতে হবে।
কোভিড মোকাবিলায় যোগী সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপির বিধায়ক-সাংসদদের ক্ষোভও প্রকাশ্যে এসেছে। আরএসএস ও বিজেপির নেতারা উত্তরপ্রদেশে সরেজমিনে পরিস্থিতি বুঝতে গিয়ে সেই ক্ষোভ টের পেয়েছেন। কিন্তু তার পরেও উপায়ন্তর না দেখে বিজেপির সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষ কোভিড মোকাবিলায় যোগীর প্রশংসা করেছেন। কিন্তু বিজেপি শিবির মনে করছে, টিকাকরণের কম হার নিয়ে যোগীকে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে।