ছবি: পিটিআই।
দেশজোড়া বিক্ষোভের মধ্যেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বাস্তবায়িত করার কাজ শুরু করল উত্তরপ্রদেশ। রাজ্যে বসবাসকারী শরণার্থীদের তালিকা তৈরির করা শুরু করেছে প্রশাসন। দেশের মধ্যেই যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যই প্রথম এই আইনের আওতায় নাগরিকত্ব প্রদান করার বিষয়ে উদ্যোগী হল।
সিএএ-এর আওতায় পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান— এই তিন পড়শি দেশের হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে যোগী সরকার। প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই শরণার্থীদের চিহ্নিত করে ইতিমধ্যেই একটি তালিকা তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে তারা।
সিএএ নিয়ে দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতোই বিক্ষোভ-প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছে উত্তরপ্রদেশ। যোগীর রাজ্যে বিক্ষোভ ঘিরে ছড়িয়েছে হিংসার আগুন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার বলি হয়েছেন ২৮ জন। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে পুলিশি নির্যাতনেরও অভিযোগ উঠেছে যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তবে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সত্ত্বেও সিএএ বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর রাজ্য প্রশাসন। রবিবার অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) অবনীশ অবস্থী জানিয়েছেন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা যে সব শরণার্থী নাগরিকত্ব ছাড়াই উত্তরপ্রদেশে দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করছেন, তাঁদের চিহ্নিত করতে রাজ্যের প্রতিটি জেলাশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবস্থী বলেন, ‘‘আফগানিস্তান থেকে এ রাজ্যে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা কম হলেও এখানে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের এমন বহু মানুষ রয়েছেন যাঁরা নিজেদের দেশ থেকে বিতাড়িত।’’ ওই সব মানুষদের কাছে এ দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। সেই সঙ্গে রাজ্যে কত জন বেআইনি ভাবে বসবাস করছেন, তা-ও জানা যাবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ক্ষোভ-উষ্মার মধ্যেই দফতর বণ্টন উদ্ধবের, বেশি মন্ত্রী এনসিপির
অবস্থী জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের লখনউ, হাপুর, রামপুর, শাহজাহানপুর, নয়ডা এবং গাজিয়াবাদেই পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি শরণার্থীদের ভিড় বেশি। ওই সব এলাকার শরণার্থীদেরও তালিকা তৈরি করা হবে। তাঁর মতে, একমাত্র ‘বৈধ’ শরণার্থীরাই যাতে এ দেশের নাগরিকত্ব পান, তা নিশ্চিত করাই রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য। সে কারণেই এই তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। অবস্থীর কথায়, ‘‘এই প্রথম এ ধরনের তালিকা তৈরি হবে। এবং নয়া আইনের আওতায় একমাত্র ‘বৈধ’ শরণার্থীদেরই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন: নানকানা সাহিব গুরুদ্বারে হামলাই সিএএ বিরোধীদের জবাব, বললেন অমিত শাহ
প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই তালিকা ছাড়াও রাজ্যের মুসলিম শরণার্থীদের একটি তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এর পর তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু হবে। যদিও এ বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।