দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
জার্মানির পর এ বার আমেরিকা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুলল ওয়াশিংটন। আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানের গ্রেফতারি সম্পর্কে তারা যে ওয়াকিবহাল, সেটাই জানাল আমেরিকা। শুধু তা-ই নয়, কেজরীওয়াল যেন ন্যায্য, স্বচ্ছ এবং সময়োপযোগী বিচার পান, তা নিশ্চিত করার পক্ষেই সওয়াল করল তারা। আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। যদিও রয়টার্স প্রতিবেদনে ওই মুখপাত্রের নাম উল্লেখ করেনি। তবে বর্তমানে আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র হলেন ম্যাথু মিলার।
ওই মুখপাত্রের কথায়, ‘‘আশা করি কেজরীওয়াল ন্যায্য, স্বচ্ছ এবং সময়োপযোগী বিচার পাবেন।’’ অনেকের মতে, কেজরীওয়ালকে নিয়ে মন্তব্য করে ভারতের উপর পরোক্ষ ভাবে চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে আমেরিকা। যদিও ভারতের তরফে এখনও পর্যন্ত আমেরিকার মুখপাত্রের মন্তব্য নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন জার্মানি। ভারতের জার্মান দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কূটনীতিক জর্জ এনজ়ওয়েলার জানিয়েছিলেন যে, তিনি আশা করেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা’ এবং ‘মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ’ কেজরীওয়ালের বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযুক্ত হবে। জার্মান কূটনীতিকের এ হেন মন্তব্য ভাল ভাবে নেয়নি ভারত। কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হয় ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে।
কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে এনজ়ওয়েলার বলেছিলেন, “যে কোনও অভিযুক্ত ব্যক্তির মতোই কেজরীওয়ালও স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ বিচার পাওয়ার দাবিদার। কোনও রকম বিধিনিষেধ ছাড়াই তিনি যেন সব ধরনের আইনি সহযোগিতা পান। আইনের শাসনের মূল বিষয়ই হল অভিযুক্ত নিরপরাধ, প্রথম এই ধারণায় আসা। এই নীতি তাঁর (কেজরীওয়াল) ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।” তাঁর মন্তব্যকে ‘দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করে প্রতিক্রিয়া দেয় ভারত। পাশাপাশি শনিবার তাঁকে নয়াদিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকে তলবও করা হয়েছিল বলে খবর। সেই আবহের মধ্যেই কেজরীওয়ালকে নিয়ে মন্তব্য করল আমেরিকা।
দিল্লির আবগারি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ন’বার কেজরীওয়ালকে তলব করেছিল ইডি। কিন্তু এক বারও তিনি ইডি দফতরে হাজিরা দেননি। গত বৃহস্পতিবার নবম তলব এড়ানোর পরই সন্ধ্যায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সে দিন রাতেই গ্রেফতার করা হয় কেজরীওয়ালকে। আদালত তাঁকে সাত দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। আগামী ২৮ মার্চ কেজরীওয়ালের ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। অন্য দিকে ইডির হাতে গ্রেফতারি এবং নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। বুধবারই সেই মামলার শুনানি রয়েছে আদালতে।