US Election Results 2020

ফলাফলে পাল্টে যাবে না সম্পর্ক, বলল নয়াদিল্লি

বিজেপি সরকারের কাছে স্বস্তির দিক হল, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আদৌ ভাবিত নন ট্রাম্প।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৩
Share:

জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি এএফপি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অথবা জো বাইডেন— যিনিই হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হোন না কেন, ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তার কোনও প্রভাব পড়বে না। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল এখনও স্পষ্ট নয়। তারই মধ্যেই এই কথা জানিয়ে দিল ভারত। আজ বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান— এই দ্বিদলীয় সমর্থনের ভিতে পোক্ত ভাবে দাঁড়িয়ে দু’দেশের সম্পর্ক। ফলে নতুন প্রেসিডেন্ট কে হলেন, তার জেরে এই সম্পর্ক প্রভাবিত হবে না।’’

Advertisement

বিদেশসচিবের কথায়, “আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সে দেশের দ্বিদলীয় সমর্থনের উপরে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এটা সময়ের দ্বারা পরীক্ষিত এবং এর অনেকগুলি দিক রয়েছে।’’ শ্রিংলার মতে, দুই দেশের মধ্যে শুধু যে একই মূল্যবোধ এবং নীতিগত মিল রয়েছে তা-ই নয়, কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিও একই রকম। তা দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক বা বহুপাক্ষিক, যা-ই হোক না কেন। প্রবীণ কূটনীতিকরা যদিও বলছেন, বাণিজ্য-চুক্তি থেকে অভিবাসন নীতি— ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবর্তে জো বাইডেন এলে অবশ্যই কিছু পরিবর্তন দেখা যাবে আমেরিকার ভারত সংক্রান্ত নীতিতে। ট্রাম্প থাকলে মোটের উপরে যে ভাবে চলছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, সে ভাবেই এগোবে।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্প্রদায় এ বার ঢেলে বাইডেনকে ভোট দিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বাইডেন ভারতের কাছে নতুন চরিত্র নন। ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন অথবা সেনেটর হিসেবে তিনি ঘনিষ্ঠ ভাবে ভারতের সঙ্গে কাজ করেছেন। ভারতের সঙ্গে অসামরিক পরমাণু চুক্তি সম্পাদনায় তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, বাইডেন ক্ষমতায় এলে ভারতের সঙ্গে সন্ত্রাস-বিরোধিতা এবং চিনের আগ্রাসী নীতির মোকাবিলায় সমন্বয় আরও শক্তিশালী হবে। সম্প্রতি আমেরিকার একটি সংবাদপত্রে লেখা নিবন্ধে বাইডেন নিজেই সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এইচ১বি ভিসা এবং সার্বিক ভাবে অভিবাসন নীতি নিয়েও বাইডেন কিছুটা ছাড় দিতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজ্যে এক দিনে রেকর্ড সুস্থ, ৯ শতাংশের নীচে সংক্রমণের হার​

আরও পড়ুন: মাথাব্যথা ভিড় নিয়েই, কোন রুটে কত লোকাল দরকার, বৈঠকে রেল-রাজ্য

অন্য দিকে, ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্কে মোটের উপরে স্বাচ্ছন্দ্য রয়েছে বলেই দাবি করছে কূটনৈতিক শিবির। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এটা ঠিকই যে, ট্রাম্পের মধ্যে নীতিগত ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। তিনি কী করতে চলেছেন, তা আগে থেকে অনুমান করাও দুঃসাধ্য। সম্প্রতি যেমন ভারতকে ‘নোংরা’ বলেছেন ট্রাম্প। মোদীকে নিয়ে বেশ কয়েক বার ঠাট্টাও করেছেন প্রকাশ্যে। আবার তাঁর সঙ্গে মোদীর রসায়ন প্রকাশ্যে এসেছে টেক্সাস এবং গুজরাতের জনসভায়। গত বছর সেপ্টেম্বরে ‘হাউডি মোদী’-র অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার জন্য আমেরিকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছিলেন মোদী। এ কথা ঠিক যে, বাণিজ্য-চুক্তির ক্ষেত্রে এক কদমও এগোনো যায়নি। কিন্তু আমেরিকার সঙ্গে ভারতের প্রধান চারটি প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে ট্রাম্প জমানাতেই। ‘টু প্লাস টু’ কাঠামোর আলোচনায় হাতে-কলমে ফল পাওয়া গিয়েছে সম্প্রতি। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিন-বিরোধী অক্ষ তৈরি করে উন্মুক্ত ও উদার সমুদ্রপথ তৈরির বিষয়টিতে সক্রিয় ভাবে ভারতের সঙ্গে রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

বিজেপি সরকারের কাছে স্বস্তির দিক হল, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আদৌ ভাবিত নন ট্রাম্প। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা অসহিষ্ণুতা অথবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলি নিয়ে তাঁকে বড় একটা প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায়নি। ট্রাম্পের শাসনকালে আমেরিকা তাদের কিছু পুরনো শরিকের থেকে দূরত্ব তৈরি করেছে। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারত তাদের কাছে এই মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শরিক রাষ্ট্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement