প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
আগামী মাসেই আমেরিকা সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবারই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তাঁর। দুই রাষ্ট্রনেতার ফোনালাপের পরে ট্রাম্পই নিজেই জানান, সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতে আমেরিকা সফরে যেতে পারেন মোদী।
সোমবার ফ্লরিডা থেকে ম্যারিল্যান্ডে আমেরিকার বায়ুসেনা ঘাঁটি জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ়ে ফিরছিলেন ট্রাম্প। সেই সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বিমান ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এ ওঠার আগে তিনি বলেন, “তাঁর (মোদীর) সঙ্গে আমার অনেক ক্ষণ ধরে কথা হয়েছে। সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতেই তিনি হোয়াইট হাউসে আসছেন। ভারতের সঙ্গে আমাদের খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে।” মোদীর সঙ্গে ফোনে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয় আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করেননি ট্রাম্প। তিনি জানান, সব বিষয়ই উঠে এসেছে আলোচনায়।
মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত স্তরেও সম্পর্ক বেশ মসৃণ। প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্পের শেষ বিদেশ সফর ছিল ভারতে। আমেরিকার হিউস্টনে ২০১৯ সালে ‘হাউডি মোদী’ সভায় মোদীর বক্তৃতা এবং ২০২০ সালে গুজরাতের অহমদাবাদে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের বক্তৃতা থেকে দুই রাষ্ট্রনেতার সম্পর্ক অনুমান করা যায়। সোমবার মোদী-ট্রাম্প ফোনালাপের পর প্রধানমন্ত্রীর দফতরের একটি সূত্র জানায়, মোদীকে ফোন করে নতুন দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক আলোচনার সূচনা করেছেন ট্রাম্প। পরে সমাজমাধ্যমে মোদী লেখেন, ‘প্রিয় বন্ধু’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিশ্ব শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির জন্য দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলেও জানান মোদী।
দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং দু’দেশের রাষ্ট্রনেতার ব্যক্তিগত সম্পর্ক মসৃণ হলেও ট্রাম্প এ বার ক্ষমতায় আসার পর বেশ কিছু নীতি গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম হল আমেরিকার স্বার্থকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেখা হবে, তার পরে অন্য দেশের কথা বিবেচনা করা হবে। সেই লক্ষ্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও করতে শুরু করেছে ট্রাম্পের প্রশাসন। অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে দেশ থেকে বিতাড়ন (ডিপোর্ট) করতে শুরু করেছে ট্রাম্পের প্রশাসন। ভারতও জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসন কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কোনও অবৈধ অভিবাসীর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নথি পেলে ভারত তাঁদের ফিরিয়ে নেবে বলেও জানানো হয়েছে। সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও আমেরিকা সফরকালে এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
পাশাপাশি আমেরিকায় যাওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা পেতে দীর্ঘ অপেক্ষার বিষয়েও আলোকপাত করেছেন জয়শঙ্কর। বিদেশমন্ত্রী বলেন, “যদি সাধারণ নাগরিকদের ভিসা পেতে এত দিন সময় লেগে যায়, তবে (দ্বিপাক্ষিক) সম্পর্ক ঠিক ভাবে পালিত হয় না। ভিসায় এই দেরির কারণে ব্যবসায়, পর্যটনে প্রভাব পড়ে। আমাদের সম্পর্কের ভিত্তি হল মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ। (ভিসায় দেরি হলে) তা এই প্রক্রিয়াকে সীমিত করে দেয়।”