উপ-বিদেশসচিব উইন্ডি শেরম্যান। ফাইল চিত্র।
আগামী সপ্তাহে ভারতে আসছেন আমেরিকার উপ-বিদেশসচিব উইন্ডি শেরম্যান। সূত্রের খবর, বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর— আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসে পাকিস্তানের ভূমিকা, তালিবান সরকারকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাস পাচারের মতো বিষয়গুলি অগ্রাধিকার পাবে তাঁর আসন্ন নয়াদিল্লি সফরে। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, সফরটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শীর্ষ বৈঠকের দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বসবেন শেরম্যান।
তবে উইন্ডি শেরম্যানের সফরের মধ্যে একটি অস্বস্তির কাঁটাও রয়েছে বলে জানাচ্ছে কূটনৈতিক শিবির। ভারত থেকে পাকিস্তানে যাবেন তিনি। ভারতের দীর্ঘমেয়াদী অস্বস্তির বিষয়, ভারত এবং পাকিস্তানকে একই বন্ধনীর মধ্যে রেখে আমেরিকা তথা প্রথম বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলির এশিয়া সফর। দেখা যাচ্ছে বাইডেন জমানায় শেরম্যানও ভিন্ন পথে হাঁটছেন না। তবে, এই সময়ের ভূরাজনৈতিক হাওয়া অন্য রকম। বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরতা, সমীকরণ এবং একে অন্যের সঙ্গে দর কষাকষির শর্তগুলিও অত্যন্ত বদলে গিয়েছে গত কয়েক বছরে। চিনের সঙ্গে আমেরিকার সংঘাত ফিরিয়ে এনেছে ঠান্ডা যুদ্ধের স্মৃতি। চিনের অন্যতম মিত্র পাকিস্তানের প্রতি কৌশলগত নির্ভরতাও বিভিন্ন কারণে কমিয়েছে আমেরিকা। আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর ওয়াশিংটন সর্বশক্তি গিয়ে ঝাঁপাতে চাইছে
ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনকে দমাতে।
গত সপ্তাহে ভারত এবং আমেরিকার শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের পরে যে যৌথ বিবৃতিটি প্রকাশিত হয়, সেখানে পাকিস্তানের নাম করা হয়নি ঠিকই। কিন্তু কিছুই বলতে ছাড়া হয়নি। জো বাইডেন এবং নরেন্দ্র মোদীর সই করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস রোধে সহযোগিতা বাড়াবে দুই দেশ। আফগানিস্তানের মাটিতে কোনও জঙ্গি সংগঠন যাতে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম, প্রশিক্ষণ বা সন্ত্রাসবাদের স্বর্গোদ্যান গড়ে না-তোলে, সে দিকেও সতর্ক যৌথ নজরদারির কথা বলা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। ফলে পাকিস্তান সম্পর্কে আগামী দিনে যথেষ্ট কঠোর মনোভাব নেওয়ার বার্তাই দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এই প্রেক্ষাপটে শেরম্যানের ইসলামাবাদ সফরটিও ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।