তপসিলি জাতি ও উপজাতিদের সংরক্ষণ নিয়ে উত্তপ্ত লোকসভা। —ফাইল চিত্র
চাকরি ও পদোন্নতিতে তফসিলি জাতি-উপজাতিদের সংরক্ষণ সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘিরে উত্তপ্ত সংসদ। তার জেরে দফায় দফায় ব্যাহত হয় অধিবেশনের কাজকর্ম। সরকারের তরফে বিবৃতি দেওয়া হলেও তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিরোধীরা। ওয়াক আউট করে কংগ্রেস। কেন্দ্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে।
শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, সরকারি চাকরি ও পদোন্নতিতে তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতিদের সংরক্ষণ মৌলিক অধিকার নয়। রাজ্যগুলি সংরক্ষণের বন্দোবস্ত করতে আইনগত ভাবে বাধ্য নয়। সেই রায়ের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।
সোমবার তার আঁচ পড়ল সংসদেও। বিষয়টিতে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করে লোকসভায় গোড়া থেকেই হট্টগোল শুরু করেন কংগ্রেস-সহ অধিকাংশ বিরোধী দলের সাংসদরা। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী লোকসভায় বলেন, ‘‘সংরক্ষণ তুলে দেওয়া বিজেপি ও আরএসএস-এর ডিএনএ-তে রয়েছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী ও মোহন ভাগবত যতই সেটার স্বপ্ন দেখুন, আমরা সেটা কখনওই তুলতে দেব না।’’ লোক জনশক্তি পার্টির সভাপতি চিরাগ পাসোয়ানও এই বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপের দাবিতে সরব হন।
আরও পড়ুন: তফসিলিদের উপর অত্যাচার রোধে কড়া আইন ফেরাল সুপ্রিম কোর্ট
তবে সরকার পক্ষের তরফে বার বার বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে, এটা শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্ত, এখানে সরকারের কিছু করার নেই। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী সেটাই সংসদে বলেন। তবে তিনি জানান, আজই কেন্দ্রের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করা হবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘কংগ্রেস এই নিয়ে রাজনীতি করছে।" তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র যখন বিবৃতি দেবে বলছে, সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।’’ কিন্তু তাতেও বিরোধীদের হই হট্টগোল থামেনি। তার জেরে দুপুর দু’টো পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার ওম বিড়লা। পরে অধিবেশন শুরু হলে ফের এ নিয়ে হইচই শুরু হয়।
আরও পড়ুন: রাস্তা আটকে অনির্দিষ্ট কাল প্রতিবাদ চলতে পারে না, শাহিন বাগ নিয়ে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের
দুপুর দু’টোয় অধিবেশন ফের শুরু হলে বিবৃতি দেন সামাজিক ন্যায়বিচার মন্ত্রী থাবরচন্দ গহলৌত। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের ওই রায় নিয়ে সরকার উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করছে। তবে একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, এই মামলার সঙ্গে কেন্দ্রের কোনও সম্পর্কই নেই। কেন্দ্রকে কখনওই মামলার কোনও পক্ষ করা হয়নি। মন্ত্রীর এই বিবৃতির পরেই ওয়াক আউট করেন কংগ্রেস সাংসদরা।