Uttar Pradesh

‘হিংসা চালাচ্ছে যোগীর পুলিশই’

‘‘আমি কেন গ্রেফতার হয়েছিলাম জানেন?’’ নিজেই উত্তর দিলেন প্রাক্তন আইপিএস এস আর দারাপুরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২৯
Share:

যোগী আদিত্যনাথ।—ছবি পিটিআই।

‘তুম লোগ’। একটাই পরিচিতি।

Advertisement

লখনউয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর সাদাফ জাফরের মনে হয়েছিল, ‘‘আমার যেন আর কোনও পরিচিতি রইল না। আমি যে সামাজিক কাজকর্ম করি, আমি যে থিয়েটার করেছি, ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছি, আমি যে অনুবাদ করি, সেই সব পরিচয় ধুয়েমুছে গেল।’’

‘‘আমি কেন গ্রেফতার হয়েছিলাম জানেন?’’ নিজেই উত্তর দিলেন প্রাক্তন আইপিএস এস আর দারাপুরী। ‘‘একটাই কারণ। আমি মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম। নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিপক্ষে ছিলাম।’’

Advertisement

উত্তরপ্রদেশে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আজ দিল্লিতে গণ-আদালত বসিয়েছিল কয়েকটি নাগরিক সংগঠন। সেখানে সাদাফ-দারাপুরীরা তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। দিনভর শুনানির শেষে জুরিরা রায় দিলেন, উত্তরপ্রদেশে রাজ্য প্রশাসনই হিংসা চালাচ্ছে। সাদাফকে প্রথমে থানায় নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। ‘‘আমাকে যে মারধর করা হতে পারে, আমাকে যে এ দেশে পাকিস্তানি বলে ডাকা হতে পারে, আমার সামনে যে অন্য লোককে উলঙ্গ করা হতে পারে, তা অবিশ্বাস্য ছিল। মনে হচ্ছিল, আমি যেন হিটলারের জার্মানিতে এক জন ইহুদি। কেন আমার সঙ্গে এমন আচরণ করা হল? আমি মুসলিম। বারবার ‘তুম লোগ’ শব্দটাই শুনেছি।’’ সাদাফ গ্রেফতার হয়েছেন শুনে থানায় গিয়েছিলেন সমাজকর্মী দীপক কবীর। তাঁকে ‘কমিউনিস্ট’, ‘শহুরে নকশাল’ বলে হাত-পা চেপে ধরে পুলিশ। তার পর? নির্দেশ আসে, ‘‘এমন পেটাও যেন হাত-পা-মুখ দু’ইঞ্চি ফুলে যায়।’’

গণ-আদালতে জুরির আসনে ছিলেন এ পি শাহ, সুদর্শন রেড্ডির মতো প্রাক্তন বিচারপতিরা। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইরফান হাবিবও ছিলেন। ইরফান বলেন, ‘‘ব্রিটিশ জমানাতেও নেহরু-গাঁধী আলিগড়ে গিয়েছেন। ১৪৪ ধারা জারি হয়নি। এই লড়াইটা শুধু উত্তরপ্রদেশের নয়, গোটা ভারতের।’’

উত্তরপ্রদেশ ঘুরে হর্ষ মন্দার, নিবেদিতা মেননদের তুলে আনা ছবি-ভিডিয়ো দেখে, সাদাফদের বক্তব্য শুনে প্রাক্তন বিচারপতি এ পি শাহ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, ‘‘কী ভাবে একটা পুলিশ বাহিনী এতখানি সাম্প্রদায়িক হয়ে গেল?’’ স্বাধীন ভারতে কি এই পরিস্থিতি আগে তৈরি হয়নি? ইরফানের জবাব, ‘‘না, কারণ জরুরি অবস্থার সময় কী আইন, তা জানা ছিল। এখানে আইনই নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement