গোরক্ষপুর রেলস্টেশন থেকে গ্রেফতার মোবাইল চোর। —প্রতীকী ছবি।
হাতসাফাইয়ে দক্ষতার নিরিখে বেতন। শুধু তা-ই নয়, মাসিক বেতনও রয়েছে প্রত্যেকের। কারও ১৫ হাজার, কারও ১০ তো কারও আবার ৬ হাজার টাকা। অভিজ্ঞতা আর দক্ষতার ভিত্তিতে বেতনের মাপকাঠিও নির্ধারণ করা হয়। ঠিক যেন কোনও প্রতিষ্ঠিত সংস্থা! মোবাইল চোরের তেমনই একটি বড় চক্রের কীর্তি ফাঁস করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
গোরক্ষপুর থেকে ওই চক্রের বেশ কয়েক জন সদস্য শুক্রবার গ্রেফতার হয়েছেন। এই গ্যাংয়ের সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্যের বয়স ১৫। পুলিশ জানিয়েছে, এই গ্যাংয়ের মাথা মনোজ মণ্ডল এবং তার দুই শাগরেদ করণ কুমার ও তাঁর ভাই ধরা পড়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। গোরক্ষপুর রেলস্টেশন থেকে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে ৪৪টি মোবাইল ফোন, নগদ ১০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে।
গোরক্ষপুর জিআরপি-র পুলিশ সুপার সন্দীপ মীনা জানিয়েছেন, চোরেদের এই গ্যাং মূলত ঝাড়খণ্ডের। গ্যাংয়ের মাথা মনোজকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, তাঁর মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা। তবে হাতসাফাইয়ের দক্ষতা, দিনে কতগুলি মোবাইল চুরি করছে, তার সংখ্যা এবং অভিজ্ঞতার নিরিখে সদস্যদের বেতন ঠিক হয়। মনোজ আরও জানিয়েছেন, তাঁর দলের সদস্যদের বেতন ৫-১৫ হাজারের মধ্যে। সঙ্গে বিনামূল্যে খাওয়াদাওয়া এবং চুরির জন্য যাতায়াত বাবদ ‘ট্র্যাভেলিং অ্যালাওয়্যান্স’ও দেওয়া হয়। মূলত রেলস্টেশন, ভিড় এলাকা, বাজারগুলিই মনোজদের শিকারের জায়গা। সেখান থেকে মোবাইল চুরি করে বাংলাদেশ, নেপালে পাঠিয়ে দেয়।
নিজের গ্রাম থেকেই অল্পবয়সি ছেলেদের দলে নিতেন মনোজ। তাদেরই বাছা হত, যাদের পরিবারে অনটন রয়েছে, পড়াশোনা বেশি দূর হয়নি। সেই সব ছেলেকে নিয়োগ করে তিন মাস ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করে দেওয়া হত। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারলেই মাসিক বেতনপ্রাপ্ত কর্মী হিসাবে অন্তর্ভুক্তি হত দলে। গোরক্ষপুর, সন্ত কবীর নগর, মহারাজগঞ্জ এবং কুশীনগর ছিল তাদের শিকারের জায়গা।