তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে। ছবি সংগৃহীত।
মুসাম্বির রস নয়, প্লেটলেটই দেওয়া হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীকে, এমনটাই দাবি করলেন প্রয়াগরাজের জেলাশাসক সঞ্জয় খাত্রি। তিনি জানিয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি অনুসন্ধান করেছে। সেই তদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, মৃত ডেঙ্গি রোগীকে মুসাম্বির রস দেওয়া হয়নি। প্লেটলেটই দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই প্লেটলেট যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। সেই কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের ওই উচ্চ পদস্থ আধিকারিক বুধবার মুসাম্বির রসের অভিযোগ একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ঘটনার তদন্তের জন্য আমরা একটা ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ না করা প্লেটলেট দেওয়া হয়েছিল ওই রোগীকে। এই তথ্যের ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
প্রয়াগরাজের ‘গ্লোবাল হসপিটাল অ্যান্ড ট্রমা কেয়ার সেন্টার’-এ ৩২ বছর বয়সি এক ডেঙ্গি রোগীর মৃত্যুর পর থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। রোগীর পরিবারের অভিযোগ ছিল, রক্তের প্লেটলেটের বদলে মুসম্বির রস স্যালাইনে ভরে দেওয়া হয়েছিল। অথচ মুসম্বি ভরা ব্যাগের উপরে লেখা ছিল ‘প্লাজমা’! ওই রস শরীরে যাওয়ার পরই রোগীর অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে বলে পরিবারের অভিযোগ। তড়িঘড়ি অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রোগীকে। কিন্তু সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, অন্য হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁদের জানিয়েছেন, গ্লোবাল হাসপাতালে রক্তের প্লেটলেটের বদলে রোগীর শরীরে দেওয়া হয়েছিল কিছু রাসায়নিক মিশ্রিত মিষ্টি মুসম্বির রস।
অভিযোগের পর প্রয়াগরাজের পুলিশ একটি চক্রের ১০ জনকে গ্রেফতার করে। যারা নকল প্লেটলেট সরবরাহের কারবারের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, এই চক্রটি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে তাকেই প্লেটলেট বলে সরবরাহ করত বিভিন্ন জায়গায়।
বিতর্কের মাঝে হাসপাতালটিও সিল করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে কোনও রোগী ভর্তি নেই। বুধবার যোগী প্রশাসন বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে হাসপাতালটিকে বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে নোটিসও পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে। তার মাঝেই তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে এল অন্য তথ্য।