যোগী আদিত্যনাথ।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদের জেরে উত্তরপ্রদেশে ভাঙচুর করা হয়েছে সরকারি সম্পত্তি। সেই সব সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ লক্ষ টাকা চেয়ে ৬০ জনকে নোটিস পাঠাল ৬০ জনকে। এঁদের মধ্যে ২৮ জন রামপুর জেলার এবং বাকিরা গোরক্ষপুরের। রামপুরের যে বাসিন্দাদের মঙ্গলবার নোটিস পাঠানো হয়েছে, তাঁদের সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। গোরক্ষপুরের বাসিন্দাদের নোটিস দেওয়া হয় গত শুক্রবার। প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের এমন নোটিস পাঠালেও দোকান এবং গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে কানপুর পুলিশের বিরুদ্ধেও। ২১ ডিসেম্বর বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলার সময়ে এই কাণ্ড ঘটায় পুলিশ। এই ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। কানপুরের হিংসার তদন্তের জন্য বুধবারই বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার।
সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদ চলাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বিক্ষোভকারীদের ‘বদলা’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে বলেছিলেন, বিক্ষোভকারীদের সম্পত্তি নিলাম করে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে। সেই কাজই শুরু করে দিল যোগী প্রশাসন।
রামপুর প্রশাসন এবং পুলিশের হিসেব, বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে গোটা জেলায় ২৫ লক্ষ টাকার সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, প্রাথমিক হিসেবে উঠে এসেছিল ১৫ লক্ষ টাকার সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে চূড়ান্ত হিসেবে দেখা যায়, ২৫ লক্ষ টাকার সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। এই ভাঙচুরের জন্য ২৮ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দাবি করে তাঁদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘নোটিসে ২৮ জনের কাছে এটাও জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।’’
গত শনিবার রামপুরে হিংসায় নিহত হয়েছেন ২২ বছরের এক যুবকের। পুলিশের একটি মোটরবাইক-সহ আগুন লাগানো হয় ছ’টি গাড়িতে। গ্রেফতার করা হয় ৩৩ জনকে। ১৫০ জনেরও বেশি লোককে চিহ্নিত করা হয়েছে হিংসায় জড়িত থাকার কারণে।
ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে কানপুর পুলিশের বিরুদ্ধেও। সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-আন্দোলনের জেরে ২১ ডিসেম্বর কানপুরে হিংসা ছড়িয়েছিল। মোবাইল ফোনে তোলা সেই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, হিংসা থেমে যাওয়ার পরে কানপুরের বেগমগঞ্জ এলাকায় প্রায় ১০০ জন পুলিশকর্মীর একটি দল দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করছে। পুলিশের দলটি ভাঙচুর চালায় বন্ধ দোকানের দরজাতেও।
কানপুর পুলিশ দাবি করেছে, তারা একটিও গুলি চালায়নি। কিন্তু কানপুর হিংসায় নিহত ৩০ বছরের মহম্মদ রইসের বাবা দাবি করেন, ‘‘আমার ছেলে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ছিল না। সে একটি বিয়েবাড়ির বাসনপত্র ধুচ্ছিল, সেই সময় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আমার ভাই আমাকে জানিয়েছে, পুলিশ সরাসরি আমার ছেলেকে গুলি করে মেরেছে।’’