বন্যায় বিধ্বস্ত উত্তরপ্রদেশ। — ফাইল চিত্র।
উত্তরাখাণ্ড, হিমাচলের পাশাপাশি বন্যায় বিপর্যস্ত উত্তরপ্রদেশও। সরকার জানিয়েছে, সে রাজ্যের ২৩টি জেলার ৬০১টি গ্রামে বন্যার কবলে পড়েছেন প্রায় দু’লক্ষ মানুষ। বন্যার্তদের জন্য ১,১০১টি আশ্রয় শিবির গড়ে তোলা হয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, আমরোহার ৪৫টি গ্রাম, আজমগড়ের আটটি গ্রাম, বালিয়ার একটি, বরাবাঙ্কির চারটি, বস্তির ছ’টি, বিজনোরের ৩০টি, বদাউনের ২৭টি, ফারুখাবাদের ১১৫টি, ফতেহপুরের চারটি, গোণ্ডার ২৩টি, গোরখপুরের চারটি, হরদৈয়ের ৫৫টি, মুজফ্ফরনগরের ৪০টি, উন্নাওয়ের ৮০টি গ্রাম বন্যার কবলে পড়েছে। এই তালিকা আরও দীর্ঘ।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বন্যাবিধ্বস্ত গ্রামগুলিতে ২,১৩৫টি মেডিক্যাল দল পাঠানো হয়েছে। ১,৫০৪টি ত্রাণ শিবিরও খোলা হয়েছে। জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৪টি দল উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছে। ২,৮৩৮টি নৌকায় চলছে উদ্ধারকাজ। রামগঙ্গা নদী শাহজাহানপুরে এবং বালিয়াতে ঘাঘরা নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছেন, বন্যাবিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দারা অন্য জায়গায় যেতে চাইলে সরকার কলোনি গড়ে দিতে পারে। ত্রাণ কমিশনার জিএস নবীন কুমার জানিয়েছেন, বন্যার ফলে কত ফসল নষ্ট হয়েছে, কত জমি জলের নীচে, তা নিয়ে জেলাশাসকরা রিপোর্ট দেবেন সরকারকে। বুধবারও উত্তরপ্রদেশে গড়ে ১.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
অগস্টের শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, চলতি বর্ষার মরশুমে বৃষ্টি, বজ্রপাত, ভূমিধসের কারণে ২,০৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সব থেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে বিহারে। সেখানে বর্ষা সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ৫১৮ জন। তার পরেই রয়েছে হিমাচল প্রদেশে। সেখানে মারা গিয়েছেন ৩৩০ জন। ১ এপ্রিল থেকে ১৭ অগস্ট বৃষ্টির কারণে দুর্ঘটনা এবং বন্যার জেরে নিখোঁজ ১০১ জন। আহত ১,৫৮৪ জন। গোটা দেশে বন্যায় বিপর্যস্ত ৩৩৫টি জেলা। তার মধ্যে মধ্যপ্রদেশের ৪০টি জেলা, অসমের ৩০টি জেলা, উত্তরপ্রদেশের ২৭টি জেলা, হিমাচলের ১২টি জেলা, উত্তরাখণ্ডের সাতটি জেলা বন্যার কবলে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, এই বছর বন্যার ডুবে মারা গিয়েছেন ৮৯২ জন, বজ্রাহত হয়ে মারা গিয়েছেন ৫০৬ জন, ভূমিধসে মারা গিয়েছেন ১৮৬ জন। অন্যান্য কারণে মারা গিয়েছেন ৪৫৪ জন।