পথে পড়ে রক্তাক্ত নাবালিকা, মোবাইলে ভিডিয়ো তুলতে ব্যস্ত জনতা! ছবি— সংগৃহীত।
ব্যস্তসমস্ত হয়ে কেউ বলছেন পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে কি? কারও বা প্রশ্ন, পুলিশ সুপারের ফোন নম্বরটা দিন তো! কিন্তু কেউই এগিয়ে গেলেন না নাবালিকাকে উদ্ধার করতে। কারণ, প্রাণ বাঁচানোর চেয়েও তখন যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে মোবাইলে ধরে রাখা। চিৎকার করতে করতে নাবালিকা এক সময় জ্ঞান হারাল, পুরো ঘটনার রেকর্ডিং চলল ঘিরে ধরে থাকা জনতার মোবাইলে। কিন্তু এক জনও উদ্ধারে এগিয়ে এলেন না। উত্তরপ্রদেশের কনৌজের এই ঘটনায় আবার কাঠগড়ায় বদলে যাওয়া গণ-মানসিকতা।
সোমবার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ১৩ বছরের এক নাবালিকা। কয়েক ঘণ্টা পর তার দেখা মেলে একটি জাতীয় সড়কের ধারে, রক্তাক্ত অবস্থায়। এ ভাবে নাবালিকাকে পড়ে থাকতে দেখে ভিড় জমে যায় আশপাশে। সবার হাতেই মোবাইল। নাবালিকা বাঁচানোর আর্তি জানালেও তা আর শোনে কে! সবাই ব্যস্ত তাকে মোবাইলে ধরে রাখতে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ঘটনার ২৫ সেকেন্ডের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, নাবালিকাকে ঘিরে ধরে চলছে ভিডিয়ো রেকর্ডিং। কেউ কেউ অবশ্য পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে কি না তা জানতে চেয়েছিলেন বা পুলিশ সুপারের নম্বর চেয়েছিলেন, কিন্তু সেই মোবাইলে চোখ রেখেই। পরে পুলিশ এসে নাবালিকাকে উদ্ধার করে। এক পুলিশকর্মী পাঁজাকোলা করে নাবালিকাকে তুলে একটি অটোতে উঠছেন, সেই ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে।
এখনও স্পষ্ট নয়, নাবালিকা জখম হয়েছিল কী ভাবে। তার সঙ্গে কি যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে? নাকি কোনও পথদুর্ঘটনা? পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে। কনৌজের পুলিশ সুপার কুয়াঁর অনুপম সিংহ বলেছেন, ‘‘নাবালিকাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। নাবালিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে প্রশ্ন উঠছে, রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকা নাবালিকার আর্তি উপেক্ষা করে জনতা কী করে ভিডিয়ো তুলতে ব্যস্ত থাকল!