স্ত্রীকে খুন করে তাঁর দেহ বাড়ি থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে পুঁতে দিয়ে আসার অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই-ই নয়, কারও যাতে সন্দেহ না হয়, আবার নিখোঁজ ডায়েরিও করেন পুলিশে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ঘটনাটি লখিমপুর খেরির।
অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম অভিষেক অবস্থি। অভিযোগ, গত ২৬ নভেম্বর স্ত্রী বন্দনাকে (২৮) খুন করেন তিনি। তার পর দেহ লোপাটের জন্য লখিমপুর খেরি থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে গড়মুক্তেশ্বরে বন্দনার দেহ পুঁতে দিয়ে আসেন অভিষেক। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের ঘটনার দিন স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি হয় চিকিৎসকের। তার পরই চিকিৎসক এবং তাঁর বাবা গৌরীশঙ্কর অবস্থি ভারী কোনও বস্তু দিয়ে বন্দনার মাথায় আঘাত করেন। আর তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
লখিমপুর খেরির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরুণ কুমার সিংহ বলেন, “স্ত্রীকে খুনের পর চিকিৎসক তাঁর দেহ স্যুটকেসে ভরে প্রথমে নিজের ক্লিনিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তার পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ডাকেন। সেই অ্যাম্বুল্যান্সে করেই গড়মুক্তেশ্বর যান। সেখানে বন্দনার দেহ পুঁতে দিয়ে আসেন। পর দিন কোতওয়ালি সদর থানায় স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়েরিও করেন চিকিৎসক।”
সোমবার চিকিৎসককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেই সময় খুনের কথা স্বীকার করেন তিনি। তার পরই চিকিৎসক এবং তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, যে অ্যাম্বুল্যান্সে করে স্ত্রীর দেহ নিয়ে গিয়েছিলেন, সেটির চালককে বলেছিলেন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে স্ত্রীর।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দনাও পেশায় এক জন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ছিলেন। ২০১৪ সালে লখিমপুরের বাসিন্দা চিকিৎসক অভিষেকের সঙ্গে বিয়ে হয়ে তাঁর। স্বামী-স্ত্রী মিলে সীতাপুর রোডে গৌরী চিকিৎসালয় নামে একটি হাসপাতাল খোলেন। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আশান্তি শুরু হয়। তখন বন্দনা অন্য একটি হাসপাতালে চাকরি করা শুরু করেন।
লখিমপুর সদরের সার্কল অফিসার সন্দীপ সিংহ বলেন, “২৭ নভেম্বর একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম অভিষেক অবস্থির কাছ থেকে। তিনি স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়েরি করেন। থানায় অভিযোগে জানিয়েছিলেন যে, বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিস নিয়ে স্ত্রী পালিয়েছেন।” এর পরই পুলিশ অভিষেকের দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে খোঁজখবর নেয়। তখন তারা জানতে পারে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা ছিল না। তার পরই অভিষেকের উপর নজর রাখা শুরু করে পুলিশ।