জনসংযোগ: দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগে সভা সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের রামপুরে। ছবি পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদবকে রুখতে আজ ত্রিমুখী আক্রমণ শানালেন বিজেপি নেতৃত্ব। শাহজাহানপুরে যোগী আদিত্যনাথ যখন হিন্দু ভোটের মেরুকরণে সক্রিয়, তখন বরেলীতে অমিত শাহ সরব এসপি শাসনে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে। আবার আজই কাসিরাম নগর বা কাসগঞ্জ থেকে আক্রমণের নেতৃত্ব দেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর আক্রমণের নিশানায় ছিল মুলায়ম-অখিলেশ যাদবদের পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি।
প্রাথমিক ভাবে অনেকে উত্তরপ্রদেশের লড়াই একতরফা মনে করলেও, গত তিন-চার মাসে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা ঘুরিয়ে দিতে পেরেছ্ন মুলায়ম পুত্র।বিজেপির কাছে এখন প্রধান ও একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী অখিলেশ যাদব। উত্তরপ্রদেশের দ্বিতীয় পর্বের ভোট হতে চলেছে জাঠ বলয়ের সহরানপুর, বিজনৌর, আমরোহার মতো এলাকায়। তেমনি ভোট হবে রামপুর, মোরাদাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাতেও। তাই পরিকল্পিত ভাবে মেরুকরণের রাজনীতিকে উস্কে দিতে দ্বিতীয় পর্বেও গন্না-জিন্না প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন যোগী।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ওই অংশটি গন্না অর্থাৎ আখ চাষের জন্য সুপ্রসিদ্ধ। আখের দামই ওই এলাকায় অনেকাংশে স্থানীয় রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে।আজ আখের দাম প্রসঙ্গে যোগী বলেন, ‘‘আমরা যখন গন্নার (আখ) কথা বলি, তখন বিরোধীরা জিন্নার কথা বলেন। উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে মুসলিমদের সমর্থন জোগাড়ে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বার জিন্নার প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন অখিলেশ। রাজনীতির অনেকের মতে, এতে অখিলেশের কতটা সুবিধে হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, মেরুকরণের প্রশ্নে ফায়দা কুড়িয়েছেন যোগী ও তাঁর দল। আজ মেরুকরণের প্রশ্নে গন্না-জিন্নাতেই না থেমে যোগী তাঁর সঙ্গে অখিলেশের কথোপকথনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। যোগীর দাবি, তিনি প্রশ্ন করেছিলেন যে অখিলেশ ক্ষমতায় থাকাকালীন আদৌ কোনও উন্নয়নের কাজ করেছিলেন কি না! উত্তরে অখিলেশ নাকি জানান, তিনি কবরস্থানের দেওয়াল মেরামতি করেছিলেন। আজ যোগী বলেন, সপা উন্নয়ন হল কবরখানার উন্নয়ন।সেখানে বিজেপি রাজ্যের মানুষের উন্নত চিকিৎসার সুযোগ করে দিচ্ছে।
যোগীর পরে বরেলী এলাকা থেকে আক্রমণ শানানোর দায়িত্ব নেন অমিত শাহ। অতীতে এসপি শাসনে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা খারাপ ছিল, সে সব প্রসঙ্গ তুলে ধরে সরব হন তিনি। এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় নেতা তথা রামপুরের সাংসদ আজম খানের অনুপস্থিতি নিয়ে আজ মুখ খোলেন অখিলেশ। আজম উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে মুখতার আনসারি ও আতিক আহমেদের মতোই বাহুবলী বলে পরিচিত। অখিলেশ বলেন, ‘‘ভোটে আজম খান পাশে থাকলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই অন্য ধরনের হত।’’ শাহের কটাক্ষ, ‘‘আদিত্যনাথ গুন্ডারাজ খতম করেছেন আর এক জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভোটে জিততে অপরাধীদের টিকিট বণ্টন করে যাচ্ছেন।’’
এরপরই ব্যাটন হাতে নেন মোদী। সমাজবাদী পার্টিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘‘পরিবারতান্ত্রিক দলে নবাগত যুবকদের উপরে ওঠার সব ধরনের রাস্তা বন্ধ। পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি হল উজ্জ্বল ভবিষ্যতের শত্রু।’’ তিনি দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশের প্রথম দফায় মানুষ যে ভাবে ভোট দিয়েছেন তা থেকে স্পষ্ট, রাজ্যে ফের ক্ষমতায় আসছে বিজেপি। যদিও সেই দাবি উড়িয়ে আজ অখিলেশ বলেছেন, ‘‘জাঠেরা যে ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন, তাতে ভয় গিয়েছে বিজেপি।’’