ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশে ভোটের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল যোগী আদিত্যনাথ সরকার। ২০১৯ সালে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের সময়ে নষ্ট হওয়া সম্পত্তির জন্য আন্দোলনকারী হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করছে যোগী সরকার। আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘‘আপনাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মানতে হবে। ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখুন। আপনারা এই প্রক্রিয়া বন্ধ না করলে আমরা প্রক্রিয়া বাতিল করব।’’ তাঁদের মতে, এ ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ সরকারই ‘অভিযোগকারী, বিচারক ও সরকারি কৌঁসুলি’র মতো আচরণ করেছে।
উত্তরপ্রদেশে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের পরে আন্দোলনকারীদের ছবি প্রকাশ করে যোগী সরকার। পরে বিক্ষোভের সময়ে ধ্বংস হওয়া সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের আদায়ের জন্য ওই ব্যক্তিদের নোটিস পাঠানো শুরু হয়।
এই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা পারভেজ আরিফ টিটু। আবেদনে তিনি জানান, একতরফা ভাবে নোটিস পাঠানো হয়েছে। এমনকি ৬ বছর আগে মৃত ব্যক্তির নামেও নোটিস পাঠিয়েছে যোগী সরকার।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী গরিমা প্রসাদ জানান, ৮৩৩ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ১০৬টি এফআইআর করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণের জন্য পাঠানো হয়েছে ২৭৪টি নোটিস। তার মধ্যে ২৩৬টি নোটিসের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ জারি হয়েছে।
বিচারপতিরা বলেন, ‘‘২০০৯ ও ২০১৮ সালের দু’টি রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল ২০১৯ সালের বিক্ষোভের ক্ষতিপূরণ আদায়ের ট্রাইবুনালে বিচারবিভাগীয় আধিকারিক নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলাশাসককে সেই দায়িত্ব দিয়েছে।’’ বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যে ২৩৬টি নোটিস খুব বড় বিষয় নয়। আপনারা কলমের এক আঁচড়ে নোটিস বাতিল করতে পারেন। তা না হলে ফলের জন্য তৈরি থাকুন। আমরা আপনাদের জানিয়ে দেব সুপ্রিম কোর্টের রায় কী ভাবে মানতে হয়।’’
বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানতে চান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন ট্রাইবুনালে অতিরিক্ত জেলাশাসকদের দায়িত্ব দেওয়া হল। উত্তরপ্রদেশের কৌঁসুলি জানান, এই বিষয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের ২০১১ সালের এক নির্দেশকে পরে হাই কোর্ট মান্যতা দিয়েছে। ২০২০ সালে পাশ হওয়া ‘উত্তরপ্রদেশ সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস ক্ষতিপূরণ’ আইনেও অতিরিক্ত জেলাশাসকদের নিয়োগের কথা রয়েছে।
বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘আমরা অন্য প্রক্রিয়া নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। ২০১৯ সালের সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে নোটিসই আমাদের বিবেচ্য। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের তৈরি নিয়ম অমান্য করে প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে।’’