তালিবান নিয়ে অভিমুখ বদলের ইঙ্গিত? গ্রাফিক- সনৎ সিংহ
রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাস সংক্রান্ত বিবৃতিতে আচমকাই উধাও ‘তালিবান’ শব্দটি! কাবুল বিস্ফোরণের পর জারি করা বিবৃতিতে ‘তালিবান’ শব্দটিই খুঁজে পাওয়া যায়নি। অথচ ১৫ অগস্ট কাবুলের পতনের পরের বিবৃতিতে ‘তালিবান’ শব্দটি ছিল। তা হলে কি দ্বিতীয়বার আফগানিস্তান দখল নেওয়া তালিবান সম্পর্কে অভিমুখ বদলাচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জ?
১৫ অগস্ট কাবুলে গনি সরকারের পতন এবং ২৬ অগস্ট কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ। দু’য়ের মাঝে ব্যবধান মাত্র ১১ দিনের। আর এই ১১ দিনেই কি বদলে গেল রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিবানের প্রতি অভিমুখ? ১৬ অগস্ট জারি করা বিবৃতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ স্পষ্ট লিখেছিল, ‘তালিবান অথবা কোনও আফগান গোষ্ঠী বা কোনও ব্যক্তির উচিত নয় অন্য কোনও দেশে চলা জঙ্গি কার্যকলাপকে সমর্থন করা।’
২৬ অগস্টের বিবৃতিতে সব এক থাকলেও নেই শুধু ‘তালিবান’ শব্দটি। তার বদলে সেখানে লেখা হয়েছে, ‘কোনও আফগান গোষ্ঠী বা ব্যক্তি যেন অন্য কোনও দেশে চলা জঙ্গি কার্যকলাপকে সমর্থন না করে।’
ঘটনাচক্রে, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে অগস্ট মাসের জন্য সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ভারতের প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি।
১১ দিনের ব্যবধানে ‘তালিবান’ শব্দটির উধাও হয়ে যাওয়ার মধ্যে তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন কূটনীতিকদের একাংশ। রাষ্ট্রপুঞ্জে গত বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন সৈয়দ আকবরুদ্দিন। টুইটে এই বিষয়টি তুলে ধরে তিনি কটাক্ষের সুরে লিখেছেন, ‘কূটনীতিতে এক পক্ষকাল বিরাট সময়!’
এখন প্রশ্ন, ১১ দিনের ব্যবধানে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের এমন বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গির কী প্রভাব পড়তে চলেছে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানে? বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর অবশ্য প্রকাশ্যে তালিবান নিয়ে বিশেষ কিছু জানাননি। কেবল বলেছেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করার সময় এখনও আসেনি।
কিন্তু বাস্তব ছবি বলছে অন্য কথা। আফগানিস্তানে ভারতের দূতাবাসের সমস্ত কর্মীকে আগেই উদ্ধার করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, ভারতের দূতাবাসের অফিসে ঢুকে খানাতল্লাশি চালিয়েছে তালিবান। অফিস চত্বরে পার্ক করা গাড়িও নিয়ে গিয়েছে তারা। ফলে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের প্রেস বিবৃতি থেকে রাতারাতি ‘তালিবান’ শব্দটি বাদ গেলেও আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন বিদেশমন্ত্রকের কর্তারা।