প্রতীকী ছবি।
পরিবার না-চাওয়ায় উন্নাওয়ের নিগৃহীতাকে আপাতত দিল্লির এমস-এ স্থানান্তর করা হচ্ছে না। আদালত বান্ধব ভি গিরির মাধ্যমে নিগৃহীতার মা এ দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে জানান, লখনউয়ের কিং জর্জেস মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসায় তাঁরা সন্তুষ্ট। নিগৃহীতার অবস্থাও যথেষ্ট সঙ্কটজনক। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা চাইছেন দিল্লির বদলে এখানেই চিকিৎসা চলুক। প্রধান বিচারপতি এর পরে জানিয়ে দেন, এখনই নিগৃহীতাকে দিল্লিতে স্থানান্তরের প্রয়োজন নেই। তবে পরিবার চাইলে পরে এমসে তাঁর চিকিৎসা করাতে পারেন।
লখনউয়ের হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, নিগৃহীতার পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। ভেন্টিলেটর ছাড়াও তিনি শ্বাস নিতে পেরেছেন। তবে এখনও জ্বর রয়েছে। রবিবার রায়বরেলীতে নিগৃহীতার গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কায় কাকিমা ও তাঁর বোন মারা যান। মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন নিগৃহীতা ও তাঁর আইনজীবী মহেন্দ্র সিংহ। প্রতিবেশী বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলার পর থেকেই নিগৃহীতা ও তাঁর আইনজীবী প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছিলেন। সিবিআই প্রাথমিক তদন্তের পরে বিধায়ক, তার ভাই এবং অনুগামীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে। এই মামলা ও ধর্ষণ সংক্রান্ত চারটি মামলাই উত্তরপ্রদেশের বাইরে দিল্লির তিসহাজারি আদালতে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে শুক্রবার উত্তরপ্রদেশ সরকার নিগৃহীতার পরিবারের হাতে ২৫ লক্ষ চাকার চেক তুলে দিয়েছে। যোগী আদিত্যনাথ সরকারের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) আওয়ানীশ অবস্তী জানিয়েছেন, লখনউয়ের জেলাশাসক এবং এসএসপি
নিগৃহীতার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে এসেছেন। অন্তর্বর্তী ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই টাকা পরিবারের হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এ দিনই রায়বরেলী জেল থেকে নিগৃহীতার কাকাকে দিল্লির তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ট্রাকের ধাক্কার ঘটনার তদন্ত সাত দিনে শেষ করে ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট পেশ করার জন্য কাল সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। এর পরে শুক্রবার থেকে নতুন উদ্যমে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। এ জন্য শুক্রবার ২০ সদস্যের বিশেষ তদন্তদল তৈরি করেছে তারা। কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির ৬ জন বিশেষজ্ঞকে এ দিন রায়বরেলীর ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁরা দুমড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। জেলে কারা কারা সেঙ্গারের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন, তার তালিকাও খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
উন্নাওয়ে বিজেপির চার বারের বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের বাড়ির উল্টো দিকেই নিগৃহীতার বাড়ি। শুধু হুমকি দেওয়া বা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়াই নয়, নিগৃহীতার বাড়ির ওপর নজরদারির জন্য সেঙ্গার নিজের বাড়ির দেওয়ালে একটি শক্তিশালী সিসি ক্যামেরাও বসিয়েছিল। সংবাদ মাধ্যমের তদন্তে এই ক্যামেরার খবর উঠে আসার পরে সিবিআই তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে।