গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
যুব সম্মেলনের বক্তৃতা শেষে ভারত মাতার নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তার উপযুক্ত প্রতিধ্বনি না পেয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তিনি। এক তরুণীকে ডেকে দাঁড় করিয়ে অনুষ্ঠান কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বললেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে বলে দিলেন, ‘‘ভারতকে নিয়ে যে গর্ব অনুভব করে না, তার এই সম্মেলনে থাকারও অধিকার নেই’’।
শনিবারের ঘটনা। কেরলের কোঝিকোড়েতে যুব সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মীনাক্ষি লেখি। বক্তৃতা শেষ করে শ্রোতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন ‘ভারত মাতা কি জয়’। জবাবে শ্রোতাদের দিক থেকেও ভেসে আসে পাল্টা জয়ধ্বনি। তবে মন্ত্রী খেয়াল করেন, মঞ্চের পাশেই একটি জায়গা থেকে আসা জয়ধ্বনির স্বর কিছু নীচু। কেউ কেউ জয়ধ্বনি দিচ্ছেনও না। তাতেই মেজাজ হারান তিনি।
কোঝিকোড়ের ওই যুব সম্মেলনের আয়োজন করেছিল এক অ-বামপন্থী সংগঠন। সেই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মীনাক্ষির একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে মন্ত্রীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘আপনারা আমার সঙ্গে বলুন ভারত মাতা কি জয়।’’ মন্ত্রীর নির্দেশ পালন করেন প্রায় সকলেই। কিন্তু মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এই দিকের গলার স্বর কিছুটা দুর্বল। আবার বলুন ভারত মাতা কি জয়।’’ প্রত্যুত্তর শোনা যায় আবার। কিন্তু মন্ত্রী তার পরেও সন্তুষ্ট হন না। বরং কিছুটা বিরক্তি সহকারেই তাঁকে এর পর বলতে শ্রোতাদের একটি অংশের দিকে তাকিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনারা এখনও হাতে হাত রেখে বসে আছেন (চিৎকার করে ভারত মাতা কি জয় বলেন) আবার এই জায়গাটার গলার স্বর শোনা যাচ্ছে না। কী প্রবলেম বস? কোনও সমস্যা আছে?’’
মন্ত্রীর এমন প্রশ্নে শ্রোতাদের একাংশ বিস্মিতই হয়। কিন্তু মন্ত্রী থামেন না। আরও এক বার ভারতমাতার নামে জয়ধ্বনি দিয়ে তিনি ভিড়ের মধ্যে এক তরুণীকে উঠে দাঁড়াতে বলেন। মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এই যে হলুদ পোশাক পরিহিত মাননীয়া (এক তরুণীকে), আপনি উঠে দাঁড়াবেন, হ্যাঁ আপনাকেই বলছি। এ দিক-ও দিক দেখতে হবে না। আপনাকে আমি সবার সামনে একটা প্রশ্ন করব, ‘ভারত আপনার মা নয়?’’’
এর জবাবে ওই তরুণী কী বলেন, তা ভিডিয়োয় দেখা যায়নি। সেখানে মন্ত্রীকেই এর পর আবার বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার মনে হয় তোমার এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়া উচিত। যে ভারতকে নিয়ে গর্ববোধ করে না, যার ভারতের কথা বলতে লজ্জা হয়, তার এই যুব সম্মেলনে থাকার কোনও অধিকার নেই, প্রয়োজনও নেই।’’