Union Minister Giriraj Singh

পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া টাকা আদায় করতে মোদীর সঙ্গে দেখা করুন মমতা, পরামর্শ গিরিরাজের

শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেও কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যসভায় এ বিষয়ে বলেন তৃণমূল সাংসদ শমিরুল ইসলাম। পরে ফের একই বিষয়ে ফের সরব হন সুদীপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৪:৪৮
Share:

কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। ছবি: পিটিআই।

তিনি নন, পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ মঞ্জুর করতে পারেন একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই—তৃণমূল নেতৃত্বকে তা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রাজ্যের বকেয়া অর্থ পেতে গেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করার পরামর্শ দিয়েছেন গিরিরাজ এবং তিনি এ-ও বুঝিয়ে দেন, মন্ত্রী হলেও অর্থ মঞ্জুর করার বিষয়টি তাঁর হাতে নেই।

Advertisement

সকালে প্রশ্নোত্তর পর্বে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে রাজ্যের বকেয়া নিয়ে একপ্রস্ত বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রতিবাদে কক্ষত্যাগ করেন সুদীপ-সহ অন্য সাংসদেরা। পরে বেলা বারোটায় অধিবেশন শুরু হলে সুদীপের বেঞ্চের দিকে এগিয়ে আসেন গিরিরাজ। বসে পড়েন সুদীপের পাশে। পরে লোকসভার বাইরে সুদীপ দাবি করেন, ‘‘বাংলার বকেয়া অর্থের বিষয়ে গিরিরাজের সঙ্গে দীর্ঘ কথা হয়। তিনি আমাদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনাদের মুখ্যমন্ত্রীকে বলুন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে। তবেই জট খুলবে।’’ শাসক দলের নেতা হয়েও যে গিরিরাজ আজ তৃণমূলকে পরামর্শ দিয়েছেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

এ যাবৎ পশ্চিমবঙ্গকে টাকা দেওয়ার প্রশ্নে অনড় গিরিরাজ ওই দৌত্যের কথা বলে রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনার সৃষ্টি করেছেন। এই প্রশ্নও উঠেছে, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সম্মতিতেই কি ওই বার্তা দিলেন গিরিরাজ? না কি এ তাঁর নিজস্ব মতামত! এমনিতেই শীতকালীন অধিবেশনের সময়ে মমতার দিল্লি সফরে আসার কথা রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের মতে, রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি মমতার দেখা করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। সম্ভবত সেই বিষয়টি মাথায় রেখে গিরিরাজ আজ তৃণমূলকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন যে, ওই বৈঠক হলে যেন আলাদা করে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বকেয়া টাকার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সামনে তোলেন মমতা।

Advertisement

আজ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেও কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যসভায় এ বিষয়ে বলেন তৃণমূল সাংসদ শমিরুল ইসলাম। লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে একই বিষয়ে ফের সরব হন সুদীপ। গিরিরাজকে উদ্দেশ করে সুদীপ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে ৩৮ হাজার গ্রাম আছে। যে সব গ্রামে দুর্নীতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে টাকা আটকে দিন। কিন্তু কিছু গ্রামের জন্য গোটা রাজ্যকে কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে?’’ তিনি এ-ও ফের জানান, সম্প্রতি তৃণমূলের একটি প্রতিনিধিদল কৃষি মন্ত্রকে গিরিরাজের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি না থাকায় বলা হয় প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনা জ্যোতি তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন। সুদীপের অভিযোগ, আড়াই ঘণ্টা তৃণমূলের নেতাদের বসিয়ে রাখার পরে সাধ্বী পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান।

লোকসভায় সুদীপের অভিযোগের জবাব দিতে প্রথমে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন গিরিরাজ। কিন্তু যে হেতু তৃণমূল তাঁর নামে অভিযোগ তুলেছে, তাই গিরিরাজকে বসিয়ে দিয়ে নিজেই জবাব দেন সাধ্বী। তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে আমার নামে। তৃণমূল আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য আধ ঘণ্টা সময় চেয়েছিল। পাঁচ জনের পরিবর্তে দশ জন আনার অনুমতি চেয়েছিল তৃণমূল। অনুমতি দেওয়া হয় তাতেও। কিন্তু আমি আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও তৃণমূলের কোনও নেতা আমার দফতরে এসে দেখা করেননি।’’

নিরঞ্জনা মিথ্যে বলে সংসদকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল পথে চালনা করছেন, এই অভিযোগে কক্ষত্যাগ করেন তৃণমূলের সাংসদেরা। দশ মিনিট পরে প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হতে তৃণমূল সাংসদেরা লোকসভায় ফিরলে গিরিরাজ আলাদা করে কথা বলেন সুদীপের সঙ্গে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement