মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার সর্বদল শাহের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ধারাবাহিক হিংসায় নিহতের সংখ্যা দেড়শো ছুঁতে চলছে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ! অবশেষে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে ‘ঘুম ভাঙল’ কেন্দ্রের! বিরোধিদের দাবি মেনে শনিবার দিল্লিতে হবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সর্বদল বৈঠক। বিকেল ৩টেয় সংসদ ভবনের লাইব্রেরি হলে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে।
মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকার জন্য গত এক মাসে বিরোধীরা বার বার দাবি জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ কুকি এবং মেইতেই প্রধান এলাকা সফর করে কিছু পদক্ষেপ করার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। এই পরিস্থিতিতে মেইতেই সামাজিক সংগঠনগুলির যৌথমঞ্চ থৌবাল আপুনবা লুপ চলতি সপ্তাহের গোড়ায় বিবৃতি দিয়ে মণিপুরে শান্তি ফেরানোর বিষয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিল। তার পরেই ডাকা হয় সর্বদল বৈঠক।
মণিপুরে যুযুধান মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন ইতিমধ্যেই বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকারের প্রতি প্রকাশ্যে অনাস্থা প্রকাশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে। যদিও শুক্রবারের বৈঠকে এমন সম্ভাবনার কথা খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্র।প্রসঙ্গত, গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।
মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকির ভার দেওয়া হয়েছে সিআরপিএফের প্রাক্তন প্রধান কুলদীপ সিংহকে। তাঁর অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহ সমগ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার ‘অপারেশনাল কমান্ডার’ হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু তাতেও তেমন ফল মেলেনি।