অমিত শাহ। —ফাইল ছবি।
তৃণমূলের মন্ত্রীর ঘর থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যে সন্ত্রাস হচ্ছে। রবিবার দলের জাতীয় সম্মেলন থেকে অভিযোগ তুলে জোড়া অস্ত্রে তৃণমূলকে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের মন্ত্রীর ঘর থেকে ৫৫ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। শুধু এক জায়গা থেকেই এত টাকা পাওয়া গিয়েছে। সেখানে অনেক কোটি টাকার দুর্নীতির উদ্ঘাটন হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেসের নেতৃত্বে পুরো ইন্ডিয়া জোট দুর্নীতিতে লিপ্ত।’’ একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে হিংসার অভিযোগ তুলে সরব হন শাহ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘বান্ধবী’ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। ওই ঘটনায় পার্থ এবং অর্পিতাকে গ্রেফতার করে ইডি। রবিবার দলের বৈঠকে ওই প্রসঙ্গ তোলেন শাহ। তবে তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। রবিবার শাহ বক্তৃতায় বার বার ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে নিশানার কেন্দ্রবিন্দু করেছেন। দুর্নীতি প্রসঙ্গে কংগ্রেস-সহ সব বিরোধী দলকে এক ছাতার তলায় এনে আক্রমণ করেন তিনি। অমিত বলেন, ‘‘কংগ্রেস যদি এত দুর্নীতি করে তবে তার সঙ্গীরা কেন বাকি থাকবে? আম আদমি পার্টি আবগারি দুর্নীতি, মহল্লা ক্লিনিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। ঝাড়খণ্ডে এক সাংসদের বাড়ি থেকে ৩৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। ছত্তীসগঢ়ে মহাদেবের নামে জুয়া খেলা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে ডিএমকের মন্ত্রীর ঘর থেকে। তৃণমূলের মন্ত্রীর ঘর থেকে প্রচুর টাকা উদ্ধার হয়েছে। লালুপ্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে নতুন নতুন অভিযোগে এফআইআর হয়েছে।’’
রাজনৈতিক হিংসা নিয়েও বিরোধীদের কাঠগড়ায় তোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কোন রাজ্যে নির্বাচনে হিংসা হয়? কোন রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা হয়? বিরোধী শাসিত রাজ্যে এগুলো হয়। কেরলে একশোর বেশি কর্মী খুন হয়েছেন।’’ এ রাজ্য প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আমাদের প্রচুর কর্মী খুন হয়েছেন। সব সময় নির্বাচনে সন্ত্রাস হয়। সেখানে মমতাদি ক্ষমতায় রয়েছেন। ইন্ডিয়া জোটের শরিক ক্ষমতায় রয়েছে।’’ বিজেপি শাসিত রাজ্যের সঙ্গে তুলনা টেনে তিনি বলেন, ‘‘যে সব রাজ্যে আমাদের সরকারে রয়েছে সেখানে কোনও র্যাগিং হয় না। আমরা তো সন্ত্রাসের ভুক্তভোগী। তাই আমাদের হাজারের বেশি কর্মী নিহত হয়েছেন।’’ ভারত মণ্ডপম থেকে তাঁর দাবি, স্বাধীনতার পরে সবচেয়ে উন্নয়ন করেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। দলিত, আদিবাসী এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশকে সম্মান ও অধিকার দেওয়ার কাজ করেছে বিজেপি।
শনিবার ভারত মণ্ডপমে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ তুলেছিলেন বিজেপি নেতা রাজনাথ সিংহ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে নারীদের ইজ্জত, অস্মিতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। সন্দেশখালিতে যা হয়েছে সভ্য সমাজের কলঙ্ক। এর কঠোর নিন্দা হওয়া উচিত।’’ রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতায় নির্দিষ্ট করে কোনও বিরোধী শাসিত রাজ্যের নাম ছিল না। তবে ওই দিনই সেখানে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ তোলেন বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। চাঁচাঁছোলা ভাষায় তিনি তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেন। তার পরে তৃণমূল-সহ বিরোধীদের একযোগে আক্রমণ করেন শাহ।