কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, ২০ ফেব্রুয়ারি কমিশনের তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তাই কমিশনের মেয়াদ দেড় বছর বাড়ানো হল। প্রতীকী ছবি।
দু’দিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, তাঁরা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি রূপায়ণের পথে এগোচ্ছেন। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২তম আইন কমিশনের মেয়াদ আগামী লোকসভা নির্বাচনের পরে ২০২৪-এর ৩১ অগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা একে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী শিবিরের অভিযোগ পিছনের সারিতে ঠেলে দিয়ে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিতে বিজেপির কৌশল হিসেবেই দেখছেন। কারণ অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রস্তাব এলে মুসলিম সংগঠনগুলি তাদের বিয়ে, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার সংক্রান্ত ব্যক্তি আইনে ও ধর্মাচরণের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলবে। উল্টো দিকে বিজেপি-আরএসএস ‘এক রাষ্ট্র, এক আইন, এক বিধি’-র মন্ত্র আউড়ে সংখ্যালঘুদের নিশানা করবে। বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির বদলে মেরুকরণের রাজনীতিই প্রধান হয়ে উঠবে।
২২তম আইন কমিশন ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি গঠিত হলেও সবেমাত্র গত নভেম্বর মাসে তার চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, ২০ ফেব্রুয়ারি কমিশনের তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তাই কমিশনের মেয়াদ দেড় বছর বাড়ানো হল। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, এই আইন কমিশনের প্রথম থেকেই দায়িত্ব ছিল, সংবিধানে রাষ্ট্রের কর্মপদ্ধতির নির্দেশক নীতিসমূহ বা ‘ডায়রেক্টিভ প্রিন্সিপলস’ মেনে প্রয়োজনীয় আইনের সুপারিশ করা। সংবিধানের এই ‘ডায়রেক্টিভ প্রিন্সিপলস’-এই বলা হয়েছে, সকলের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে হবে। বিজেপি ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ইস্তাহারেও এর কথা বলেছিল। তা নিয়ে আদালতে বা সংসদে প্রশ্ন উঠলে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক বরাবরই বলে এসেছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিষয়টি আইন কমিশন খতিয়ে দেখবে। বিভিন্ন বিজেপি-শাসিত রাজ্যে ইতিমধ্যেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির রূপায়ণ খতিয়ে দেখতে কমিটি তৈরি হয়েছে।