প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
জাতীয় শিক্ষা নীতি অনুযায়ী দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির গবেষণায় নতুন দিশা-নির্দেশ করতে জাতীয় গবেষণা ফাউন্ডেশন (ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন) তৈরির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল মোদী সরকার। সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে এই বিল পেশ হবে।
বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ওই বিলে সিলমোহর দিয়েছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সমাজবিজ্ঞানের কোন ক্ষেত্রে, কোন বিষয়ের গবেষণায় কেন্দ্র টাকা ঢালবে, তা ঠিক করবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এই সংস্থাই।
কেন্দ্রের বক্তব্য, পাঁচ বছরে গবেষণায় ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে ৩৬ হাজার কোটি টাকা আসবে বেসরকারি ক্ষেত্র, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প সংস্থা, অনুদান সংস্থার তরফ থেকে। ফলে দেশের, বিশেষত অর্থনীতির অগ্রগতির প্রয়োজন মাফিক গবেষণায় উৎসাহ দেওয়া হবে। যে সব গবেষণায় সমাজের তেমন ‘লাভ নেই’, সেখানে অর্থ অপচয় বন্ধ হবে। এতদিন গবেষণায় কোথায় টাকা ঢালা হবে, তা ঠিক করত এসইআরবি (সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ বোর্ড)। ২০০৮ সালে তা তৈরি হয়েছিল। ওই সংস্থা এখন ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশনে মিশে যাবে।
বিরোধীদের আশঙ্কা, ভারতীয় শিক্ষণ মণ্ডলের মতো আরএসএসের সংস্থা দীর্ঘদিন ধরেই ‘ভারতীয় বিজ্ঞান’-এ গবেষণায় জোর দিয়ে আসছে। তাঁদের বক্তব্য, পৌরাণিক কালে ভারত বিজ্ঞানে অনেক উন্নতি করেছিল। সে সব নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত। খোদ প্রধানমন্ত্রীও গণেশের ঘাড়ে হাতির মাথাকে প্রথম প্লাস্টিক সার্জারি বলে বর্ণনা করেছিলেন। প্রশ্ন উঠছে, এ বার মোদী সরকার কি গবেষণাতেও গৈরিকীকরণের পথে হাঁটবে?
তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের যুক্তি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও শিল্প ক্ষেত্রের উপযোগী বিষয়ে গবেষণায় জোর দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী পরিচালন বোর্ডের প্রধান হবেন। তাঁর সঙ্গে ১৫ থেকে ২৫ জন বিশিষ্ট গবেষক, শিক্ষাবিদ, পেশাদার থাকবেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টার নেতৃত্বে সংস্থার কার্যকরী পরিষদ কাজ করবে। তাঁরাই গবেষণার দিশানির্দেশে সিদ্ধান্ত নেবেন। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহের বক্তব্য, এখন আইআইটি, আইআইএসসি-র মতো সংস্থাই গবেষণার সিংহভাগ অর্থ পায়। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পায় মাত্র ১০%। নতুন ব্যবস্থায় সেই ছবি বদলাবে বলে তাঁর দাবি।