প্রতীকী ছবি।
উত্তরপ্রদেশের ‘উ’-ও নেই। পঞ্জাবের ‘প’-ও নেই।
বাজেট বক্তৃতায় উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ ভোটমুখী রাজ্যের নাম উচ্চারণও হল না। তবে তিন কৃষি আইন নিয়ে মোদী সরকার এক বছর ধরে গোঁ ধরে থাকায় ক্ষুব্ধ উত্তরপ্রদেশ-পঞ্জাবের কৃষকদের ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করল মোদী সরকার। আগামী অর্থ বছরে কৃষকদের সস্তায় সুদে ভর্তুকি দিয়ে ১৮ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ বিলির ঘোষণা করা হল।
নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে। রাজকোষেও টানাটানি অবস্থা। তাই উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ ভোটমুখী রাজ্যের জন্য নানা রকম উপহার ঘোষণা করার সুযোগ বাজেটে ছিল না। অর্থ খরচ না করলেও ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে বাজেট পেশের সময়ে যে কোনও অর্থমন্ত্রীই ভোটারদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
নানা ভাবে ভোটার-দরদী ভাষ্য তৈরির চেষ্টা করেন। প্রথা ভেঙে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আজ তাঁর বাজেটে ভোটমুখী রাজ্যের ভোটারদের জন্য কোনও গল্প শোনানোর চেষ্টা করেননি। তবে গ্রামের মানুষ ও কৃষকদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিলেও কৃষক সংগঠনগুলি দাবি তুলেছে, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি দিতে হবে। চাষিদের থেকে শস্য কেনাও নিশ্চিত করতে হবে। এই দাবির মুখে দাঁড়িয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেটের গোড়াতেই জানিয়ে দিয়েছেন, রবি ও খরিফ মরসুমে ১৬৩ লক্ষ চাষিদের ক্ষেত্রে ১২০৮ লক্ষ টন ফসল কেনা হয়েছে। এমএসপি বাবদ চাষিদের অ্যাকাউন্টে ২.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা গিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, গোটা দেশে রাসায়নিক কীটনাশক মুক্ত প্রাকৃতিক চাষে জোর দেওয়া হবে। প্রথম দফায় গঙ্গা নদীর দু’ধারে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় চাষিদের জমিতে এই প্রাকৃতিক চাষে জোর দেওয়া হবে। বিজেপির বক্তব্য, ভোটমুখী উত্তরাখণ্ড-উত্তরপ্রদেশের চাষিরাও এর ফলে উপকৃত হবেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বক্তব্য, কেন্দ্রের বাজেটে বায়োমাস ভিত্তিক জ্বালানি উৎপাদন ও গঙ্গার ধারে রাসায়নিক মুক্ত প্রাকৃতিক চাষে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্নদাতারা এ বার ফসলের অবশেষ থেকেও লাভ তুলতে পারবেন। দেশের কৃষি সংস্কৃতিতে গুরুত্ব দেওয়ার এই পদক্ষেপের ফলে চাষিদের আয়ও বাড়বে, দূষণও কমবে।
বাজেটের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “দেশের কোটি কোটি জনতার আস্থা, মা গঙ্গার সাফাইয়ের সঙ্গে কৃষকদের কল্যাণের জন্যও এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হয়েছে। এর ফলে উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ— এই রাজ্যের গঙ্গার পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রাকৃতিক চাষে উৎসাহ দেওয়া হবে। মা গঙ্গাও এর ফলে রাসায়নিক মুক্ত হবেন।’’