সংসদে বাজেট ভাষণে নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
দশে কত পেল নির্মলা সীতারামনের বাজেট?
উত্তর দিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম: ‘‘দশে ‘এক’ আছে, ‘শূন্যও’। যে কোনও একটি বেছে নিন, আমার আপত্তি নেই।’’
মনমোহন সিংহকে অতীতে প্রশ্ন করলে তা-ও কিছু কথা বলতেন। আজ খেই হারিয়েছেন তিনিও— ‘‘এত দীর্ঘ বাজেট। বুঝতে হবে আগে।’’
সীতারাম ইয়েচুরি: ‘‘যত বেশি ফাঁপা, তত বড় বাজেট।’’
রাহুল গাঁধী বলছেন, ‘‘এ তো এই সরকারের মনমাফিক বাজেট। শুধু কথা-কথা-কথা, আসলে কিছু নেই। আসল সমস্যা বেকারি। রোজগার হবে কী করে, কোনও যুৎসই ভাবনাই নেই।’’
অন্য সময় বাজেট হলেই কিছু ক্ষণের মধ্যে টেলিভিশনের পর্দায় চলে আসতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু স্মরণকালে দীর্ঘতম বাজেট, তারপর সে বাজেট পুরোটা শেষ করতে না পারা, বাজেট পেশের সময়ই কোনও শিবিরেই উৎসাহ তৈরি না হওয়া— প্রধানমন্ত্রীও হয়তো আজ অনেকটা সময় নিয়েছেন নতুন করে ভাবার। তিন ঘণ্টা পরে এলেন বাজেট নিয়ে নিজের বক্তব্য পেশ করতে। আর ডজন বার উচ্চারণ করলেন ‘রোজগার’ শব্দটি।
তত ক্ষণে রাহুল বলে ফেলেছেন: ‘‘যুবকেরা রোজগার চান, বদলে পেলেন দীর্ঘতম বাজেট। প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী জানেনই না, কী করতে হবে। যুবকেরা ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন না। কিছু অপ্রাসঙ্গিক বিষয় শুনলাম বাজেটে।’’ চিদম্বরম বললেন, ‘‘ধোপার ফর্দের মতো পুরনো বিষয়। অনেক অনুগত বিজেপি সাংসদও এই বাজেট নিয়ে মানুষের কাছে যেতে পারবেন না। মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টাও নিশ্চয়ই হতাশ হবেন। আমি নিজেই খেই হারিয়ে ফেলেছি। এ বাজেটে রোজগার নিয়েও কিছু নেই। গত বছরের মতো আবার নিশ্চয়ই পুনর্বিচার করতে হবে সরকারকে।’’
বাজেটের পর অবশ্য বিজেপির মন্ত্রী ও নেতাদের আসরে নামিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের ভাষায় ‘ক্লান্তিকর’ বাজেটেও প্রচুর গুণ খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। রাহুলের আক্রমণের জবাব দিয়ে নির্মলাও বলেন, ‘‘আমার বাজেটের পরতে পরতে তো রোজগারের সুযোগের কথা আছে।’’ নাম না করে প্রধানমন্ত্রীও বোঝালেন সে কথা। দাবি করলেন, কৃষি, পরিকাঠামো, বস্ত্র, প্রযুক্তি, রফতানি, ছোট-মাঝারি শিল্প, স্টার্ট আপ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থনীতির ভিতকে শক্ত করায় জোর দেওয়া হয়েছে। আর সব ক্ষেত্রই রোজগার তৈরি করবে। ‘জন জন কা বাজেট’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে একের পর এক টুইটও করছেন মোদী।