প্রতীকী ছবি।
কৃষকদের মন পাওয়া যায়, এমন কিছুই দেখা গেল না দশকের প্রথম সাধারণ বাজেটে। এমনটাই মনে করছে কৃষি জগতের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞেরা। যেমন স্বরাজ পার্টির সভাপতি, জয় কিসান আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা যোগেন্দ্র যাদবের মতে, এই বাজেট ভারতীয় কৃষি ব্যবস্থার উপরে সবচেয়ে বড় ধাক্কা। যা কার্ষত কৃষকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সমান।
যোগেন্দ্রর যুক্তি, কৃষকদের কাছ থেকে শস্য কেনার জন্য বরাদ্দ এক ধাক্কায় কমিয়ে করা হয়েছে ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এটা অভূতপূর্ব। এতে সরকারের কাছে শস্য বেচার সুযোগ কমবে। বেসরকারি ক্ষেত্রের দয়ার উপরে ছেড়ে দেওয়া হল কৃষকদের। দ্বিতীয় বড় ধাক্কা, সারে ভর্তুকি ৯৮৫৭ কোটি টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ কমেছে প্রধানমন্ত্রীর আশা, এমআইএস এবং পিএসএস এবং মনরেগা প্রকল্পেও। ২০১৪ ও ২০১৫-র খরার ধাক্কা এখনও পুরো কাটিয়ে উঠতে পারেনি কৃষি জগত। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন আজ খোলা বাজারের প্রতিযোগিতার দিকে কৃষকদের আরও বেশি করে ‘এগিয়ে দেওয়ার’ কথা বলেছেন। নির্মলার এই বাজেটে কৃষি ক্ষেত্রের জন্য আছে কী? রয়েছে ২০২২-এর মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে ১৬ দফা কর্মসূচি। ২০২০-২১ অর্থ বর্ষে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করা হয়েছে ১৫ লক্ষ কোটি। আগের বারের চেয়ে এটা ১১ শতাংশ বেশি। যদিও কৃষি খাতে বরাদ্দ, চলতি বছরের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ। চলতি অর্থ বর্ষে বরাদ্দ ছিল ১.৩৯ লক্ষ কোটি। আগামী অর্থ বর্যের জন্য প্রস্তাবিত বরাদ্দ ১.৪৩ কোটি। মূল্যবৃদ্ধির চড়া হারের সামনে এইটুকু বৃদ্ধি একেবারেই নগণ্য বলে মনে করছেন অনেকে।
উল্লেখযোগ্য ঘোষণার মধ্যে কিসান রেল ও কৃষি উড়ান। পিপিপি মডেলে গোটা দেশে হিমায়িত অবস্থায় দুধ-মাছ-মাংস পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এর জন্য রেলে ঠান্ডা ওয়াগনের ব্যবস্থা করা হবে। আর বিমানে এ সব পণ্য ঠান্ডা অবস্থায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হলে উত্তর-পূর্বের কৃষিজীবীরা উপকৃত হবেন বলে সরকারের আশা। যদিও বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, কৃষকদের বাস্তব সমস্যাগুলি মেটানোর দাওয়াই নেই বাজেটে। কৃষকেরা কী ভাবে উৎসাহজনক দাম পাবেন, ঋণের বোঝা কমবে কী ভাবে— উত্তর নেই।