নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশে শিল্পীর কল্পনায় নতুন সংসদ ভবন।
মাটির নীচে তিনটি সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে নয়াদিল্লির রাজপথে। এর মধ্যে একটি প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সঙ্গে জুড়বে সংসদ ভবনকে। বাকি দু’টি পৌঁছবে উপরাষ্ট্রপতির নতুন বাড়ি এবং সাংসদদের নতুন চেম্বারে। দেশের রাজনৈতিক মহলের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় যাতে কোনও ঝুঁকি না থাকে, তার জন্যই এই ব্যবস্থা। তবে পদাধিকারে গুরুত্বপূর্ণ হলেও সংসদ ভবন থেকে কোনও সুড়ঙ্গ পথ যাচ্ছে না রাইসিনা হিলসের রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত। কারণ তাঁর নিয়মিত সংসদভবনে আসার দরকার হয় না। জাতীয় স্তরের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে এই তথ্য।
সুড়ঙ্গ পথগুলি হবে এক লেন বিশিষ্ট। গল্ফ খেলার মাঠে যাতায়াতের জন্য যে ধরনের গাড়ি ব্যবহার হয়, তেমনই গাড়িতে ওই পথ ধরে পৌঁছে যাওয়া যাবে সংসদ ভবনে। এক্ষেত্রে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। কারণ তাঁদের কোথাও যাওয়া আসা মানেই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা। সুড়ঙ্গপথে যাতায়াত তাঁদের নিরাপত্তাকে আরও সহজ করবে বলে সূত্রের খবর।
রাইসিনা হিলসের সঙ্গে ইন্ডিয়া গেটকে জুড়েছে এই রাজপথ। অবস্থানের কারণেই ভারতের ‘পাওয়ার করিডর’ বলা হয় রাজপথকে। সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পে এই চত্বরটিকেই ঢেলে সাজছে কেন্দ্র। নতুন প্রকল্পে রাজপথের এক পাশে পুরনো সংসদ ভবনের লাগোয়াই তৈরি করা হচ্ছে নতুন সংসদ ভবন। ১২০০ সাংসদের বসার জায়গা থাকবে নতুন ভবনে। এ ছাড়া সাউথ ব্লকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য তৈরি হবে নতুন বাসভবন, নর্থব্লকে উপরাষ্ট্রপতির বাড়ি। রাজপথ বরাবর বিভিন্ন মন্ত্রকের ভবন এবং সাংসদদের জন্য চেম্বারও তৈরি করা হবে। জাতীয়স্তরের ওই সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট বলছে, প্রধানমন্ত্রী, উপরাষ্ট্রপতির এই নতুন বাড়়িকেই সুড়ঙ্গ পথে জোড়া হবে সংসদ ভবনের সঙ্গে। সাংসদদের চেম্বার থেকে সংসদ ভবনে যাওয়ার জন্যও থাকবে সুড়ঙ্গ পথ।
গত ডিসেম্বরে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার একমাস পর গত ১৫ জানুয়ারি শুরু হয় নতুন সংসদভবন তৈরির কাজ। কেন্দ্রের পরিকল্পনা রয়েছে আগামী ২০২২ সালের জুলাইয়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার। সেক্ষেত্রে দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের আগে সংসদের বাদল অধিবেশন বসানো হবে নতুন সংসদভবনেই। যদিও করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে কেন্দ্রের এই নতুন সংসদ ভবন তৈরির বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, কোন পরিস্থিতিতে কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, তা ঠিক করতে পারছে না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নত করার বদলে অকারণ অর্থ ব্যয় করছে তারা।