প্রতীকী ছবি।
কোভিড প্রতিষেধক প্রয়োগের পালা শেষ হলেই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের খাতা থেকে মুছে ফেলতে হবে যাবতীয় তথ্য। শুধু তা-ই নয়, তথ্য ব্যবহারও করা যাবে শুধুমাত্র টিকাকরণের জন্য। সূত্রের খবর, এই শর্তেই বুথ ভিত্তিক ভোটারের তথ্য কেন্দ্রের হাতে দিতে রাজি হয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সেই সঙ্গে আধাসেনা, পুলিশের মতো একেবারে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে অতিমারির সঙ্গে লড়াই করা ‘ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের’ পরেই করোনার টিকা পাওয়ার কথা পঞ্চাশোর্ধ্বদের। প্রথম তিন কোটির মধ্যে তালিকায় তাঁরাও, যাঁদের বয়স পঞ্চাশের নীচে কিন্তু সুগার, প্রেশারের মতো ‘কো-মর্বিডিটি’ রয়েছে। অথচ সারা দেশে এঁদের সঠিক ভাবে চিহ্নিত করা সহজ নয়। সেই কারণেই তথ্য চেয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্র।
রাজ্য, জেলা, ব্লক স্তর ছাপিয়ে প্রত্যেক বুথের সমস্ত ভোটারের তথ্য আছে কমিশনের ভাঁড়ারে। যেখান থেকে বয়স অনুসারে (যেমন, পঞ্চাশোর্ধ্ব, ষাটোর্ধ্ব) সকলের নামের তালিকা তৈরি করা সম্ভব। সে কথা মাথায় রেখেই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এ বিষয়ে তথ্যগত সহায়তা চেয়ে ৩১ ডিসেম্বর মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভল্লা। সূত্রের খবর, ওই একই কারণে গত মাসে নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ স্তরীয় কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আমলা ও নীতি আয়োগের সংশ্লিষ্ট সদস্যরা।
কম সময়ে সারা দেশে টিকাকরণের কাজ নির্বিঘ্নে সারতে কমিশন সহায়তায় তৈরি বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সুনীলও। বলেছেন, যে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা কমিশনের রয়েছে, সরকার চাইলে তা ভাগ করে নিতে তাঁরা প্রস্তুত।
প্রতিষেধক ছাড়পত্র পাওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, টিকা সকলের কাছে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে কমিশন। কারণ, দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তেও বুথ গড়ে ভোট গ্রহণের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এখন তথ্য ভান্ডার ব্যবহারের পাশাপাশি কমিশনের সেই কৌশলও কাজে লাগাতে চায় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এক দিকে, ভোটার তালিকা থেকে বয়সের ভিত্তিতে আঠারো বছর পেরনো প্রায় সকলের নাম, ঠিকানা পাওয়া যাবে। তাতে অন্তত কিছুটা সুবিধা হবে বিভিন্ন দফায় টিকা প্রাপকদের নাম ঠিক করতে। আবার সেই সঙ্গে, প্রত্যন্ততম প্রান্তেও অল্প দিনের প্রস্তুতিতে সরকারি অফিসারদের নিয়ে গিয়ে কমিশন কী ভাবে ‘ভোট করায়’, সেই কৌশল কাজে লাগবে টিকাকরণের গতি বাড়াতে। কিন্তু এই পুরো প্রক্রিয়ায় ভোটারদের তথ্য যেন অন্য আর কোনও কাজে ব্যবহৃত না-হয়, আগে সেই বিষয়ে নিশ্চয়তা চেয়েছে কমিশন।