মাকে মারধর করেন বাবা, পুলিশের দ্বারস্থ দুই শিশুকন্যা। প্রতীকী ছবি।
থানায় পুলিশকর্মীরা যে যার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকও দিনের কাজ সারছিলেন। ভয় ভয় মুখে গুটি গুটি পায়ে থানার ভিতরে ঢুকল দুই শিশুকন্যা। এক জনের বয়স মেরেকেটে ৭ বছর। অন্য জনের বয়স ৫। সকাল সকাল থানায় দুই খুদেকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক প্রদীপ শর্মা।
দুই খুদের মধ্যে বয়সে বড় কন্যার হাতে ধরা ছিল একটি কাগজ। তাতে লেখা ছিল বেশ কিছু অভিযোগ। পুলিশ আধিকারিক তাদের প্রশ্ন করেন, ‘‘তোমরা থানায় কেন এসেছ? কাগজে ওটা কি?’’ এর পরই সেই কাগজটি আধিকারিক শর্মার দিকে বাড়িয়ে দেয় ওই কন্যা। শর্মা ভাল করে ওই কাগজটি পড়ে দেখেন, তাতে লেখা রয়েছে এক মহিলার অভিযোগ। তখন তিনি দুই কন্যার কাছে জানতে চান, এই চিঠি কার। তারা সমস্বরে শর্মাকে বলে, “এই চিঠি আমার মায়ের। তার হয়েই আমরা থানায় এসেছি।”
এর পরই শর্মাকে দুই খুদে অনুরোধ করে বলে, “আঙ্কল, আমাদের মাকে বাঁচাও। বাবা খুব মারে মাকে।” তাই তারা চায় বাবাকে গ্রেফতার করে শাস্তি দিক পুলিশ। ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের ভিতরওয়ার থানা এলাকার। দুই খুদের মুখে মা-বাবার ঝামেলা, অশান্তির কথা শুনে তাদের আশ্বস্ত করেন শর্মা। তিনি বলেন, “ভয় পেয়ো না তোমরা। ঠিক ব্যবস্থা করব।”
দুই কন্যার মুখে বাবা-মায়ের অশান্তির কথা শোনার পর তাদের বাড়িতে যান শর্মা। ওই দম্পতির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, এ ভাবে নিত্য দিন অশান্তি, ঝামেলা হলে তার প্রভাব পড়বে সন্তানদের উপর। সুতরাং, সন্তানদের কথা ভেবেই তাঁরা যেন ঝামেলা না করেন। শর্মা বলেন, “দুই শিশুকন্যার মুখে তাদের বাবার কথা শুনে আশ্চর্য হয়েছিলাম। কথা শোনার পর ওদের বাড়িতে যাই। দম্পতির কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করি। তাঁদের বোঝানো হয়, এ রকম ঝামেলা করলে তার প্রভাব সন্তানদের উপর পড়বে, যা মোটেই কাম্য নয়।”