গত মন্ত্রিসভায় যোগী সরকারে দ্বিতীয় উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন দীনেশ শর্মা। ব্রাহ্মণ ওই নেতাকেও এ বার ওই পদ থেকে সরিয়ে সংগঠনে নিয়ে আসার কথা ভেবেছে বিজেপি। পরিবর্তে ব্রাহ্মণ সমাজের নেতা তথা লখনউ ক্যান্টনমেন্ট আসন থেকে জয়ী বিধায়ক ব্রজেশ পাঠককে উপমুখ্যমন্ত্রী করার কথা নিয়ে আলোচনা চলছে।
ফাইল চিত্র।
যোগী আদিত্যনাথের প্রথম মন্ত্রিসভায় দুই উপমুখ্যমন্ত্রীর অন্যতম ছিলেন কেশবপ্রসাদ মৌর্য। কিন্তু এ বারের নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় সেই কেশবপ্রসাদের যোগী মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া নিয়ে আপাতত টানাপড়েন চরমে উঠেছে।
হেরে যাওয়া বিধায়ককে যখন মন্ত্রিসভায় নিতে অনিচ্ছুক আদিত্যনাথ, তখন রাজ্যের ওবিসি ভোটের কথা মাথায় রেখে কেশবপ্রসাদকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চাপ বাড়াচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেশবের পরিবর্তে যোগী শিবিরের পছন্দ রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা ওবিসি নেতা স্বতন্ত্র দেও সিংহ। এই টানাপড়েনের মধ্যেই সমাজবাদী পার্টির নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের অন্যতম শরিক ওমপ্রকাশ রাজভড়ের সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি ফের এনডিএ-র শরিক হতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে লখনউয়ে। এমনকি যোগীর মন্ত্রিসভায় দলের প্রধান ওমপ্রকাশ রাজভড় স্থান পেতে পারেন বলেও সূত্রের খবর।
সব ঠিক থাকলে, আগামী ২৫ মার্চ পরপর দু’বার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন যোগী আদিত্যনাথ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, জেপি নড্ডা, অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহের মতো বিজেপি শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি বিরোধী নেতাদের মধ্যে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতীকে।
সূত্রের মতে, যোগীর মন্ত্রিসভায় স্থান হতে চলেছে ৫৭ জন বিধায়কের। কিন্তু মন্ত্রিসভা গঠনের আগেই দুই উপমুখ্যমন্ত্রী পদকে ঘিরে সংশয় দেখা দিয়েছে। গত বার যোগীর মন্ত্রিসভায় এক জন উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন রাজ্যে বিজেপির ওবিসি মুখ কেশবপ্রসাদ মৌর্য। পাঁচ বছর আগে এক সময়ে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়েও ছিলেন ওই ওবিসি নেতা। কিন্তু যোগী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় তাঁকে শেষ পর্যন্ত উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেয় বিজেপি। যদিও এ বারের নির্বাচনে সিরাথু কেন্দ্র থেকে হেরে গিয়েছেন মৌর্য। ফলে
তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রী করতে রাজি নয় যোগী শিবির।
পরিবর্তে বিজেপির উত্তরপ্রদেশের সভাপতি স্বতন্ত্র দেও সিংহকে উপমুখ্যমন্ত্রী করার পক্ষপাতী আদিত্যনাথ। যোগী শিবিরের বক্তব্য, স্বতন্ত্র দেও সিংহ জনপ্রিয় ওবিসি নেতা। তা ছাড়া, রাজ্য সভাপতি হিসাবে দলের এ বারের জয়ের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও নিয়েছিলেন তিনি। তা ছাড়া যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে সুষ্ঠু তালমিল রয়েছে স্বতন্ত্র দেওয়ের। সেই কারণে তাঁকে এ যাত্রায় উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে চাইছেন যোগী। অন্য দিকে দিল্লির কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ কেশবপ্রসাদ মৌর্যের উপরেই ভরসা রাখার পক্ষপাতী। দলের ওই অংশের মতে, দীর্ঘ দিনের পুরনো নেতা কেশবপ্রসাদ হেরে গেলেও ওবিসি সমাজের উপর ভাল নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তাঁর। এ যাত্রায় পূর্বাঞ্চলের ফলাফল থেকেই স্পষ্ট, ওবিসি সমাজের একটি বড় অংশ মুখ ফিরিয়েছে বিজেপি থেকে। এই আবহে কেশবপ্রসাদ যদি নিজেকে গুটিয়ে নেন, সে ক্ষেত্রে আগামী লোকসভায় দলের ওবিসি ভোটব্যাঙ্কে ধস আরও বাড়বে। বিজেপি সূত্রের মতে, সেই কারণে কেশবপ্রসাদকে পুরনো পদে রেখে দিতেই বার্তা দেওয়া হয়েছে যোগী শিবিরকে।
গত মন্ত্রিসভায় যোগী সরকারে দ্বিতীয় উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন দীনেশ শর্মা। ব্রাহ্মণ ওই নেতাকেও এ বার ওই পদ থেকে সরিয়ে সংগঠনে নিয়ে আসার কথা ভেবেছে বিজেপি। পরিবর্তে ব্রাহ্মণ সমাজের নেতা তথা লখনউ ক্যান্টনমেন্ট আসন থেকে জয়ী বিধায়ক ব্রজেশ পাঠককে উপমুখ্যমন্ত্রী করার কথা নিয়ে আলোচনা চলছে। জল্পনা ছড়িয়েছে বিরোধী জোটের অন্যতম শরিক ওমপ্রকাশ রাজভড়ের যোগী মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়া নিয়েও। বিজেপির একাংশের দাবি, সম্প্রতি দিল্লি সফরে এসে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে ফের এনডিএ-তে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন পিছিয়ে পড়া শ্রেণির ওই নেতা। সূত্রের মতে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এনডিএ জোটের প্রাক্তন ওই দলকে ফের মন্ত্রিসভায় নিতে রাজি হয়েছে বিজেপি। যদিও ওমপ্রকাশের দাবি, তাঁর দলের এনডিএ-তে যোগদানের কোনও সম্ভাবনাই নেই।