ফাইল চিত্র
গেরুয়াপন্থীদের তৈরি একটি পরিচিত সংবাদপত্রের আদলে ছাপানো কাগজ বেআইনি ভাবে অনুমোদনপ্রাপ্ত কাগজের ভিতরে বিলি করা হচ্ছিল রেলযাত্রীদের। তা নজরে আসতেই টুইট করে জানান এক যাত্রী। তার পরেই সংবাদপত্র সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সতর্ক করল আইআরসিটিসি।
বেঙ্গালুরু থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেসে চেপেছিলেন গোপিকা বক্সী নামে ওই যাত্রী। তিনি দেখেন, নির্দিষ্ট একটি কাগজের ভিতরে রয়েছে অন্য একটি খবরের কাগজ। তার প্রথম পাতাতেই প্রকাশিত হয়েছে একটি বিতর্কিত প্রতিবেদন। এর পরেই তিনি আইআরসিটিসি-কে টুইট করে অভিযোগ জানান। তাঁর বক্তব্য, বেঙ্গালুরু-চেন্নাই শতাব্দী এক্সপ্রেসের প্রতিটি আসনে সরবরাহ করা হয়েছে ওই অনুমোদনহীন সংবাদপত্রটি। তাতে বিতর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। টুইটে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রের প্রতিবেদনটির ছবিও জুড়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, আইআরসিটিসি কী ভাবে এই সংবাদপত্র বিলি করার অনুমতি দিল?
আইআরসিটিসি-র চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর রজনী হাসিজা জানিয়েছেন, সংবাদপত্র সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সতর্ক করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, শুধুমাত্র অনুমোদনপ্রাপ্ত সংবাদপত্রই বিলি করা যাবে। আইআরসিটিসি-র তরফেও টুইট করে জানানো হয়েছে, সংবাদপত্রের ভেন্ডরকে জানানো হয়েছে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে লাইসেন্স রাখা হবে কি না, তা বিবেচনা করা হতে পারে।
ওই ট্রেনে সংবাদপত্র সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত পি তে শফি জানান, কাগজের ভেন্ডরই মূল কাগজের ভিতরে ওই কাগজটি জুড়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ট্রেন আমাদের যে ছেলেরা সংবাদপত্র বিলি করেন, তাঁরা বিষয়টি বুঝতে পারেননি।’’ শফি জানান, সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনও অতিরিক্ত কাগজ কিংবা সংবাদপত্র যাতে ভবিষ্যতে সরবরাহ করা না হয়। শুধুমাত্র অনুমোদনপ্রাপ্ত কাগজই পৌঁছে দিতে হবে যাত্রীদের। ওই ট্রেনের অন্য যাত্রীদের একাংশও অনুমোদনহীন সংবাদপত্রটি বিলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন আইআইসিটিসি-র মুখপাত্র। এই ঘটনায় রেলের বেঙ্গালুরু শাখার বিভাগীয় প্রধান উপযুক্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন।
আইআরসিটিসি-র টুইটের পরে গোপিকা নামে ওই অভিযোগকারিণী ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, নিছক কাগজের ভিতরে অন্য কাগজ জুড়ে দেওয়া নয়, গোটা কাজটাই করা হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে। এই ঘটনায় সরব হয়েছেন বহু মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গেরুয়াকরণের আঁচ লেগেছে। সেই ধারা বজায় রেখেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অনুমোদনহীন সংবাদপত্র বিলির মাধ্যমে যাত্রীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।