গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জম্মু-কাশ্মীরে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করার জন্য পাকিস্তানের দু’টি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদ ও মুজাহিদিন গত বছর ঢালাও ভাবে শিশুদের নিয়োগ করেছিল। আর সেই শিশুদের নামিয়েছিল লড়াইয়ের ময়দানে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে এ কথা জানানো হয়েছে। রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার।
রাষ্ট্রপুঞ্জের সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তোনিও গুয়োতেরেসের ওই বার্ষিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে গোটা বিশ্বে যুদ্ধ বা সংঘর্ষে মৃত বা জখম শিশুর সংখ্যা অন্তত ১০ হাজার। আর লড়াইয়ের ময়দানে ব্যবহার করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে ৮ হাজার শিশু।
যুদ্ধ বা সংঘর্ষে টালমাটাল ২০টি দেশকে নিয়ে ওই বার্ষিক রিপোর্ট দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। যার মধ্যে ভারত, ফিলিপিন্স, নাইজেরিয়া ছাড়াও রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া, আফগানিস্তান ও ইয়েমেন।
ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের সেক্রেটারি-জেনারেল গুয়োতেরেস বলেছেন, ‘‘নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র সংগঠনগুলির মধ্যে লাগাতার সংঘর্ষে শিশুরা এখনও শিকার হয়ে চলেছে বিশেষ করে, জম্মু-কাশ্মীর, ছত্তীসগঢ় ও ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলিতে।’’
আরও পড়ুন- শুজাত খুনে তিন আততায়ীকে চিহ্নিত করল পুলিশ
আরও পড়ুন- কাশ্মীর নিয়ে একহাত পাকিস্তানকে
গুয়োতেরেস এও জানিয়েছেন, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ব্যবহার করার জন্য জম্মু-কাশ্মীরে ঢালাও ভাবে শিশুদের নিয়োগ করেছে মুজাহিদিন ও জৈশ-ই-মহম্মদের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি। যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, বিপক্ষের খবরাখবর সংগ্রহের জন্য শিশুদের ব্যবহার করার ‘অসমর্থিত’ অভিযোগ রয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধেও। ছত্তীসগঢ় ও ঝাড়খণ্ডে রণক্ষেত্রে শিশুদের ব্যবহার করছে মাওবাদীরা। শিশুদের নিয়োগ করতে তারা ঝাড়খণ্ডে লটারি চালু করেছে। গত এক বছরে মাওবাদী-অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ১৮৮ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। জানানো হয়েছে, এটা দিল্লিরই দেওয়া পরিসংখ্যান।
রিপোর্টের বক্তব্য, লাগাতার হিংসা, সংঘর্ষের ফলে ঝাড়খণ্ডে যেমন বহু স্কুল দীর্ঘ দিন বন্ধ রাথতে হয়েছে, তেমনই জম্মু-কাশ্মীরে রজৌরি ও পুঞ্চ সেক্টরে দীর্ঘ দিন বন্ধ রাখতে হয়েছে প্রায় ১৫০টি স্কুল।
সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি একই ভাবে শিশুদের ব্যবহার করে চলেছে পাকিস্তানেও। গত জানুয়ারিতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবানের প্রকাশ করা একটি ভিডিয়োয় দেখানো হয়েছে, আত্মঘাতী জঙ্গি হয়ে ওঠার জন্য তারা কী ভাবে শিশুদের তালিম দিচ্ছে। কী ভাবে তালিম দিচ্ছে এমনকী, শিশুকন্যাদেরও।
রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই রিপোর্টে গত ফেব্রুয়ারিতে সিন্ধু প্রদেশের সেওহানের একটি সংঘর্ষের উল্লেখ করা হয়েছে। যে ঘটনায় ২০টি শিশু-সহ ৭৫ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়।