উদয়নিধি স্ট্যালিন। —ফাইল চিত্র।
দলের ভিতরে-বাইরে বিষয়টা নিয়ে চর্চা চলছিল অনেক দিন ধরেই। অবশেষে তাতে সরকারি সিলমোহর ফেলে রবিবার মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করতে গিয়ে তামিলনাডুর ডিএমকে জোট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা হল মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের ছেলে উদয়নিধি স্ট্যালিনকে। দলের পরবর্তী নেতৃত্বের ভার যে ছেলে উদয়নিধির হাতেই থাকবে, তা এর মাধ্যমেই বুঝিয়ে দিয়েছেন করুণানিধির কনিষ্ঠ পুত্র তথা মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন।
প্রায় দেড় দশক আগে প্রায় এ ভাবেই বড় ছেলে আলাগারিরি পরিবর্তে স্ট্যালিনকে দলের পরবর্তী নেতা হিসেবে ঘোষণা করে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়েছিলেন করুণানিধি। বাবার দেখানো সেই পথে হেঁটেই এগোলেন স্ট্যালিন।
পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে মন্ত্রিত্ব খোয়ানো সেন্থিল বালাজিকেও মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে এনেছেন স্ট্যালিন। কয়েক দিন আগেই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বালাজি। তাঁর গ্রেফতাররের সময়েই ইডি-র কার্যকলাপ নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। সম্প্রতি একাধিক মামলায় ইডি-র গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালতও। বিরোধীদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী সরকার বিরোধীদের কোণঠাসা করতেই ইডি-কে কাজে লাগাচ্ছে। বালাজিকে মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক স্ট্যালিন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কড়া বার্তা দিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রথম বারের মতো মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন তিন বিধায়ক গোভি চেজ়িয়ান, এস এম নাসার এবং আর রাজেন্দ্রনও। এ দিন রাজভবনে নতুন মন্ত্রিদের শপথবাক্য পাঠ করাল রাজ্যপাল আর এন রবি।
২০২২ সালেই ইঙ্গিত মিলেছিল, আগামী দিনে উদয়নিধিকে দলের শীর্ষে তুলে আনবেন স্ট্যালিন। ওই বছরেই তাঁকে রাজ্য মন্ত্রিসভায় আনা হয়। ক্রীড়া ও উন্নয়ন দফতরের ভার পান তিনি। গত বছর সনাতন ধর্মের কুপ্রথার বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় গেরুয়া শিবিরের রোষে পড়েন উদয়নিধি। সেই উদয়নিধিকে এ বারে উপমুখ্যমন্ত্রী করায় স্ট্যালিনের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে রাজ্যেরবিরোধী দল এডিএমকে। তাদের কটাক্ষ, করুণানিধি যে ভাবে স্ট্যালিনের হাতে দলকে তুলে দিয়েছিলেন, সেই ‘পারিবারিক ঐতিহ্য’ মেনেই উদয়নিধির হাতে পরবর্তী ব্যাটন তুলে দিলেন স্ট্যালিন। দলে যে ওই পরিবারের বাইরে কারও হাতে ক্ষমতা যাবে না, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ বলে সরব হয়েছে এডিএমকে। বিষয়টি নিয়ে আর এক বিরোধী দল বিজেপিও সরব হয়েছে।