এই হোর্ডিং ঘিরেই শুরু বিতর্ক। —টুইটার।
মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আবারও মাথাচাড়া দিল আওরঙ্গজ়েব বিতর্ক। বুধবার রাতের অন্ধকারে কে বা কারা মুম্বইয়ের মাহিম এলাকায় কয়েকটি হোর্ডিং দিয়েছেন বলে পুলিশের কাছে খবর আসে। ওই হোর্ডিংয়ে দেখা যায়, শিবসেনা (উদ্ধব) নেতা উদ্ধব ঠাকরে এবং বঞ্চিত বহুজন আঘাডী দলের প্রধান প্রকাশ অম্বেডকরের মাঝে ঠাঁই করে নিয়েছেন মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজ়েবও! তবে বৃহস্পতিবার সকালে ওই হোর্ডিংগুলির দেখা পাওয়া যায়নি।
এই ব্যানারকাণ্ডের নেপথ্যে কারা রয়েছেন তা নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ। এই নিয়ে অভিযোগও দায়ের হয়নি তাদের কাছে। তবে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মুম্বই পুলিশ। যদিও এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপান-উতোর থেমে নেই। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা একনাথ শিন্ডেপন্থী শিবসেনার নেতা দীপক কেসরকার এই ব্যানার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে উদ্ধবকে কটাক্ষ করেন। বলেন, “আওরঙ্গজ়েবের প্রতি উদ্ধবের প্রেম প্রকাশ্যেই দেখা যাচ্ছে। যাঁরা হিন্দুত্বের সঙ্গে আপস করছেন, তাঁদের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ কখনওই ক্ষমা করবেন না।” মহারাষ্ট্রের বিরোধী শিবিরের অবশ্য অভিযোগ, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের জন্যই আওরঙ্গজ়েব-বিতর্ককে উস্কে দিচ্ছে রাজ্যের বিজেপি-শিবসেনা শাসকজোট।
মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতিতে অবশ্য আওরঙ্গজ়েব-বিতর্ক নতুন নয়। সম্প্রতি এই নিয়ে ব্যাপক জলঘোলা হয়। গত ৪ জুন মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরের একটি মিছিলে আওরঙ্গজ়েবের ছবি হাতে নিয়ে কয়েক জনকে হাঁটতে দেখা যায়। এই ঘটনায় ৬ জুন চার জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুলিশ। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘‘রাজ্যে এ সব বরদাস্ত করা হবে না। এই দেশ, রাজ্যে আমাদের আরাধ্য ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ এবং ছত্রপতি সম্ভাজি মহারাজ।’’ কিন্তু প্রশ্ন ওঠে যে, আওরঙ্গজেবের ছবি নিয়ে মিছিলে হাঁটার মধ্যে দোষের কী আছে! গত ১৯ জুন এই প্রসঙ্গে মুখ খুলে ফডণবীস বলেন, “দেশের কোনও জাতীয়তাবাদী মুসলমান আওরঙ্গজ়েবকে তাঁদের শাসক হিসাবে স্বীকার করেন না।” কিন্তু এই সব ঘটনায় প্রশ্ন ওঠে যে, মোগল শাসক আওরঙ্গজেবের ছবি নিয়ে কেউ যদি মিছিলে হাঁটেন, তাতে কারও আপত্তির কী কারণ থাকতে পারে? কেনই বা আওরঙ্গজেবের ছবি নিয়ে মিছিল করলে মামলার মুখে পড়তে হবে? এর সদুত্তর মহারাষ্ট্র প্রশাসন দিতে পারেনি। আনা হয় অন্য সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ।