উদ্ধব ঠাকরে। ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল, বিজেপি ও কঙ্গনা রানাউত। একই দিনে আজ তিন নিশানায় একের পর এক তির ছুড়লেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। রাজ্যপাল ভগৎসিংহ কোশিয়ারির বিরুদ্ধে সরব হন হিন্দুত্বের প্রশ্নে। বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান তাদের ‘বিচ্যুতি’ ও ‘ভুলগুলি’ নিয়ে। আর কঙ্গনার ক্ষেত্রে বিষয়বস্তু মুম্বই পুলিশ ও উদ্ধব-পুত্র আদিত্য ঠাকরেকে নিয়ে তাঁর মন্তব্য।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুতে রিয়া চক্রবর্তী ছাড়াও আদিত্যের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন কেউ কেউ। কঙ্গনা তাঁদের অন্যতম। মুম্বইকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গেও তুলনা করেছেন তিনি। এরই জবাবে আজ প্রথম বার নিজে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, মুম্বই পুলিশের জন্য তিনি গর্বিত। কঙ্গনার নাম না-করে বলেন, “এক জন আত্মহত্যা করেছেন। তিনি বিহারের সন্তান। সেটা হতেই পারে। কিন্তু তার জন্য সকল মহারাষ্ট্রবাসীকে আপনি অপমান করেছেন। আপনি আমার ছেলে আদিত্যেরও বদনাম করেছেন। আপনি যা যা বলেছেন সে সব নিজের কাছেই রাখুন। আমরা পরিষ্কার।” মুম্বই প্রশাসনের দিকে আঙুল তোলায় মুখ্যমন্ত্রীর জবাব, “বিচার চেয়ে কিছু মানুষ মুম্বই পুলিশকে অপদার্থ আখ্যা দিচ্ছেন। বলছেন, মুম্বই নাকি পাক অধিকৃত কাশ্মীর, এখানে সর্বত্র মাদকাসক্তরা ঘুরে বেড়ায়। এঁরা জানেন না বাড়িতে বাড়িতে আমাদের তুলসী গাছ হয়, গাঁজা নয়। গাঁজার খেত রয়েছে আপনাদের রাজ্যে। মহারাষ্ট্রে নয়।” সঙ্গে কঙ্গনাকে উদ্ধবের খোঁচা, ‘‘মুম্বইকে পাক অধিকৃত কাশ্মীর বলে
আপনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই অপমান করলেন। তিনিই তো ওই ভূখণ্ডকে ভারতে ফেরাবেন বলে ছ’বছরেও পারেননি।”
রাজ্যপাল আজ এক বক্তৃতায় সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের দেওয়া হিন্দুত্বের সংজ্ঞাকে মাপকাঠি ধরে তা অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সূত্র ধরে উদ্ধবের প্রশ্ন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে মন্দিরগুলি খুলে না-দেওয়ায়, আমাদের হিন্দুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। অথচ এ রাজ্যে গোমাংস বন্ধ করার চেষ্টা চলছে আর গোয়ায় তা অবাধ! এই আপনাদের হিন্দুত্ব!’’
আরও পড়ুন: নীতীশকে পাল্টা খোঁচা তেজস্বীর
ভাগবত এ দিন স্পষ্টই বলেছেন, হিন্দুত্ব আর পূজাপাঠ এক নয়। সেটাকেই অস্ত্র করে উদ্ধবের খোঁচা, “যাঁরা ওঁকে অনুসরণ করেন ও কালো টুপি পরেন (কোশিয়ারি), তাঁদের টুপির নীচে মগজ থেকে থাকলে, ওঁর আজকের বক্তৃতাটা শুনুন।”
হিন্দুত্ব ও সুশান্ত প্রসঙ্গের বাইরে, বিহার ভোটে বিজেপির ইস্তাহারের কথা টেনে বলেন, “আপনারা বলেছেন, আগে বিহারের মানুষ বিনামূল্যে করোনার প্রতিষেধক পাবেন। এর পরে বাংলাদেশ বা কাজাখস্তান থেকে আসা মানুষ। কেন্দ্রে ক্ষমতায় থেকে এমন কথা বলার জন্য আপনাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।” বিজেপির উদ্দেশে উদ্ধবের পরামর্শ, “সরকার ফেলায় মন না-দিয়ে আগে কোভিড সামলান।”
আরও পড়ুন: শান্তির বার্তার মধ্যেও হুঁশিয়ারি রাজনাথের