CAA

সিএএ: কবিকে পুলিশে ধরিয়ে পুরস্কৃত হলেন উবর চালক

গোটা ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যান বাপ্পাদিত্য।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:০১
Share:

রোহিত সিংহের সঙ্গে এমপি লোঢা। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী কথা বলায় এক ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন যিনি, সেই উব‌র চালককে এ বার পুরস্কৃত করল বিজেপি। দলীয় সমর্থকদের জড়ো করে, ঢাকঢোল পিটিয়ে তাঁর হাতে ‘সজাগ নাগরিক পুরস্কার’ তুলে দিলেন মুম্বই বিজেপির সভাপতি এমপি লোঢা।

Advertisement

গত বুধবার রাতের ঘটনা। জুহু থেকে কুরলা যাওয়ার জন্য উব‌র বুক করেছিলেন বাপাদিত্য সরকার নামের এক যুবক। আদতে জয়পুরের ওই বাসিন্দা কবিতা লেখেন। মুম্বইয়ের ‘কালা ঘোড়া উৎসবে’ কবিতা পাঠের আমন্ত্রণ পেয়েতিনি এসেছিলেন বাণিজ্য নগরীতে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বাপ্পাদিত্য জানিয়েছেন, জুহু থেকে গাড়িতে উঠে এক বন্ধুকে ফোন করেন তিনি। সিএএ বিরোধী আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন তাঁর সঙ্গে। তাতে দিল্লির শাহিন বাগ প্রসঙ্গও উঠে আসে। সেখানে প্রতিবাদে শামিল মানুষ ‘লালসেলাম’ স্লোগান দিতে অস্বস্তি বোধ করছিলেন বলে বন্ধুকে ফোনে জানাচ্ছিলেন তিনি।সেইসময় রোহিত সিংহ নামের ওই উবর চালক আচমকাই গাড়ি থামিয়ে দেন বলে দাবি বাপ্পাদিত্যের। তাঁর দাবি, এটিএম-এ টাকা তুলতে যাচ্ছেন বলে নেমে যান চালক। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই দুই পুলিশ কর্মীকে নিয়ে ফিরে আসেন রোহিত। বাপ্পাদিত্যকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে বারবার অনুরোধ করতে থাকেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: বয়স নয়, ঋতুমতী হলেই বিয়ের যোগ্য, বিতর্কিত মন্তব্য পাক আদালতের​

গোটা ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যান বাপ্পাদিত্য। কারণ জানতে চাইলে তাঁকে শাসাতে শুরু করেন রোহিত। পুলিশের সামনে বলতে শুরু করেন, সমানে সিএএ বিরোধী কথা বলছিলেন বাপ্পাদিত্য। নিজেকে কমিউনিস্ট বলে উল্লেখ করছিলেন। এমনটাই দাবি করেছেন বাপ্পাদিত্য।পুলিশ না ডেকে তিনি যে অন্য কোথাও নিয়ে যাননি, রোহিত সিংহ নামের ওই যুবক বাপ্পাদিত্যকে এমন শাসানিও দেন বলে জানা গিয়েছে।

এর পরেই বাপ্পাদিত্যকে থানায় নিয়ে যান ওই দুই পুলিশ কর্মী। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তাঁরা। বাপ্পাদিত্যের অভিযোগ, তাঁর বাবার বেতন কত, চাকরি না করেও কীভাবে উবর চেপে বেড়ান, সঙ্গে ডাফলি নিয়ে কী করছেন, থানায় তাঁকে এমন প্রশ্ন করা হয় বলে অভিযোগ। ওই উবর চালক এবং তাঁর বয়ানও রেকর্ড করে পুলিশ। এর পর রাত ১টা নাগাদ এক পরিচিত এসে থানা থেকে বাপ্পাদিত্যকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।

বাপ্পাদিত্যর দাবি, ‘‘থানা থেকে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও, ডাফলি নিয়ে ঘুরতে বারণ করে পুলিশ। গলায় লাল রঙের স্কার্ফ রাখতেও বারণ করা হয়। পুলিশ বলে, সময় খুব খারাপ। যে কোনও মুহূর্তে খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে। তাই আরও সাবধানী হওয়া উচিত আমার।’’

আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসে উহানে মৃত্যু প্রথম বিদেশি নাগরিকের, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২৪, আক্রান্ত ৩৪ হাজারেরও বেশি​

বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় বইছিল। বুধবারের রাতের পর তাড়াহুড়ো করে বিজেপির তরফে ওই উবর চালককে ‘পুরস্কৃত’ করায় তা আরও জোরদার হয়েছে। দেশের পরিস্থিতিতে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নেটাগরিকদের অনেকে। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সমাজকর্মী কবিতা কৃষ্ণণ। তিনি বলেন, ‘‘এক জন উবর চালকের হাতে মুম্বইয়ে বাপ্পাদিত্যকে যে ভাবে হেনস্থা হতে হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের। সিএএ, এনপিআর, এনআরসি-র যুগে এখন প্রত্যেককেই সন্দেহের চোখে দেখা হবে। ইচ্ছা হলেই যাকে খুশি হেনস্থা করতে পারবে পুলিশ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement