প্রতীকী চিত্র।
পেগাসাসের মাধ্যমে আড়ি পাতার অভিযোগ নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন দুই প্রবীণ সাংবাদিক এন রাম ও শশী কুমার। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে এ নিয়ে তদন্ত শুরুর আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। ভারত সরকার বা তাদের কোনও গোয়েন্দা সংস্থা পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহারের লাইসেন্স নিয়েছে কি না এবং তা দিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আড়ি পাতার কাজ করেছে কি না তা জানানোর নির্দেশ দিতেও আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। আবেদনকারীরা জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনের উপরে নিয়ন্ত্রণের অধিকারও ব্যক্তিপরিসরের স্বাধীনতার অঙ্গ।
ইজ়রায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস সংক্রান্ত ফাঁস হওয়া তথ্যভান্ডার নিয়ে তদন্ত করছে বিশ্বের ১৬টি সংবাদমাধ্যম। তাদের দাবি, ওই তথ্যভান্ডারে ভারতের বেশ কয়েক জন রাজনীতিক, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, সেনা ও গোয়েন্দা কর্তা, শিল্পপতির নম্বর রয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের ফোনের ডিজিটাল ফরেন্সিক পরীক্ষা করে পেগাসাস হানার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলেও দাবি ওই সংবাদমাধ্যমগুলির। বিষয়টি নিয়ে আপাতত উত্তাল ভারতের রাজনীতি।
রাম ও শশী তাঁদের আবেদনে জানিয়েছেন, সামরিক মানের স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে গণহারে নজরদারি চালানো একাধিক মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। ওই স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে হামলা চালিয়ে যে সব প্রতিষ্ঠান ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোর স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে সেগুলির স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত সরকার এখনও পেগাসাসের লাইসেন্স নেওয়া হয়নি, এ কথা স্পষ্ট ভাবে বলেনি। এই গুরুতর অভিযোগের কোনও নিরপেক্ষ তদন্ত করার জন্য পদক্ষেপও করেনি।
সংবাদমাধ্যমগুলির রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে আবেদনকারীরা দু’টি প্রশ্ন তুলেছেন। প্রথমত, পেগাসাস ব্যবহার করে কি চিকিৎসক, আইনজীবী, বিরোধী রাজনীতিক, মন্ত্রী, সাংবিধানিক পদাধিকারী ও সমাজকর্মীদের ফোনে নজরদারি চালানো হয়েছে? দ্বিতীয়ত, এই ধরনের হ্যাকিংয়ের ফল কী? এ ভাবে কি বাকস্বাধীনতা ও বিরোধিতার কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে?
আবেদনকারীদের মতে, এমন নজরদারি ব্যক্তিপরিসরের স্বাধীনতার পরিপন্থী। সুপ্রিম কোর্টও ওই অধিকারকে মান্যতা দিয়েছে। মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রের উপরে নিয়ন্ত্রণের অধিকারও ব্যক্তিপরিসরের অধিকারের অঙ্গ। এ ক্ষেত্রে টেলিগ্রাফ আইনে বর্ণিত নজরদারির বিধি আদৌ মানা হয়নি। এ নিয়ে পেগাসাস কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে তিনটি আবেদন পেশ হল। এর আগে আর্জি জানিয়েছেন আইনজীবী এম এল শর্মা ও রাজ্যসভার সদস্য এম ব্রিটাস। কোনও আর্জিরই এখনও শুনানি হয়নি।