এই মন্দিরেই খুন হন ওই দুই সাধু। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
এ বার উত্তরপ্রদেশে মন্দিরের মধ্যে খুন হলেন দুই সাধু। ভাঙ খেয়ে নেশার ঘোরে এক যুবক এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেরায় ওই যুবক অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার রাতে বুলন্দশহরে একটি মন্দিরের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ৫৫ ও ৩৫ বছর বয়সি দুই সাধু ওই মন্দিরেই থাকতেন। অভিযোগ, ক’দিন আগে মন্দির থেকে চিমটে চুরি যায়। সেই চুরির ঘটনায় স্থানীয় তফসিলি যুবক মুরাই ওরফে রাজুকে তাঁরা হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ।
সেই রাগ থেকেই গতকাল রাতে ওই দুই সাধুর উপর রাজু চড়াও হন বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, তলোয়ার দিয়ে কুপিয়ে ওই দু’জনকে খুন করেন তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে নেশাগ্রস্ত এবং অর্ধনগ্ন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনা-সংক্রমণ ছড়ানোর দায়ে চিনের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবির হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রাজুর নেশা কাটেনি বলে জানান স্থানীয় পুলিশ অফিসার সন্তোষকুমার সিংহ। নেশা কাটলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। তাতে খুনের কথা স্বীকার করলেও, ঈশ্বরের ইচ্ছা পূরণ করেছেন বলে দাবি করেন ওই যুবক। তবে এই ঘটনার পিছনে কোনও সাম্প্রদায়িক কারণ নেই বলে দাবি স্থানীয় পুলিশের। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
এর আগে, ছেলে ধরা ভেবে গত সপ্তাহেই মহারাষ্ট্রের দুই সাধু এবং তাঁদের গাড়ির এক চালককে পিটিয়ে মারে উত্তেজিত জনতা। হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়া গুজবে বিশ্বাস করেই একদল মানুষ এই ঘটনা ঘটান বলে জানা যায়। তবে তা নিয়ে বিস্তর রাজনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়। সাম্প্রদায়িকতার ইন্ধন থেকেই গোটা ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে সেইসময় অভিযোগ তোলেন বিজেপি এবং সঙ্ঘের নেতারা। তবে শুরু থেকেই সেই অভিযোগ অস্বীকার করে মহারাষ্ট্র সরকার। তদন্তেও সাম্প্রদায়িক কোনও দিক ধরা পড়েনি।
আরও পড়ুন: অধিকাংশ জায়গায় ৩ মে-র পরেও লকডাউন চলবে, জানালেন মোদী
সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বুলন্দশহর থেকে এই ঘটনা সামনে এল। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করার পাশাপাশি নাম না করে বিজেপিকে কটাক্ষও করেন শিবসেনা নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘ভয়ঙ্কর ঘটনা। আশাকরি উত্তরপ্রদেশ সরকার কড়া পদক্ষেপ করবে। আশাকরি সংবাদমাধ্যমের একটি অংশ এতে সাম্প্রদায়িকতার রং লাগাবেন না। গোটা দেশ যখন করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে, আশাকরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে দোষারোপ করবেন না কেউ।’’ গোটা ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করতে যোগী আদিত্যনাথকে ইতিমধ্যেই ফোন করেছেন উদ্ধব ঠাকরে।
কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বুলন্দশহরের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘এই জঘন্য অপরাধের তদন্ত হওয়া উচিত। এই মুহূর্তে এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি হওয়া উচিত নয়। নিরপেক্ষ তদন্ত করে সত্যটা সকলের সামনে নিয়ে আশা সরকারের দায়িত্ব।’’
প্রিয়ঙ্কার টুইট।