হ্যালের তৈরি লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে ১০১ প্রতিরক্ষা সামগ্রী আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র। তার তিন দিনের মাথায় লাদাখে মোতায়েন করা হল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (হ্যাল)-এর তৈরি দু’টি লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার (এলসিএইচ)। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে তৈরির পর ভারতীয় বায়ুসেনাকে সাহায্য করতে এই হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে বলে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে হ্যাল। আর এই সূত্র ধরেই এ বছরের মধ্যে হ্যাল আরও ১৫টি এলসিএইচ এর বরাত পেতে পারে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর।
হ্যালের চেয়ারম্যান আর মাধবন বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘এটাই বিশ্বের সবচেয়ে হালকা সমর হেলিকপ্টার। ভারতীয় সেনাবাহিনীর নির্দিষ্ট ও স্বতন্ত্র চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এই হালকা হেলিকপ্টারগুলি তৈরি হয়েছে, যা আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’’ অন্য দিকে বায়ুসেনার উপপ্রধান এয়ার মার্শাল হরজিৎ সিংহ অরোরা গত সপ্তাহে লাদাখ সফরের সময় দৌলতবেগ ওল্ডি এয়ারবেস থেকে এই দু’টির মধ্যে একটি হেলিকপ্টার উড়িয়েছেন। দুই ইঞ্জিনের এই এলসিএইচ লাদাখে মোতায়েন করা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরাও।
আবার হ্যাল-এর বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, এয়ার মার্শাল অশোক অরোরাও উচ্চ অক্ষাংশের হেলিপ্যাড থেকে ফরওয়ার্ড এরিয়ায় গিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে নিয়ন্ত্রিত আঘাত হানার পরীক্ষা করে দেখেছেন এবং তাতে উত্তীর্ণ হয়েছে এই এলসিএইচ। এর সঙ্গে আরও বলা হয়েছে, ‘‘ওই এলাকার (লাদাখ) অন্যতম কঠিন হেলিপ্যাডে সফল ভাবে অবতরণ করতেও সক্ষম হয়েছে। অত্যন্ত প্রতিকূল আবহাওয়াতেও তার ক্ষমতা প্রমাণ করেছে এই এলসিএইচ।’’
আরও পড়ুন: উঠতে পারে ‘মানচিত্র’ প্রসঙ্গ, ১৭ অগস্ট ভারত-নেপাল বিদেশমন্ত্রক পর্যায়ের বৈঠক
তবে এই হেলিকপ্টার তৈরির প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বায়ুসেনার চাহিদা অনুযায়ী আরও অস্ত্রশস্ত্র বহন ও নিক্ষেপের মতো করে আপগ্রেড করতে হবে একে। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘এই এলসিএইচ নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি থাকলেও বর্তমানে যে কনফিগারেশন রয়েছে, তাতে এটি অনেক অভিযান চালাতে পারবে না। ‘অ্যান্টি আর্মার’ এবং ‘এয়ার টু এয়ার’ অস্ত্র বহন করতে পারে না। সেই আপগ্রেডেশনের প্রক্রিয়া চলছে। আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, এই হেলিকপ্টার ৭০ এমএম রকেট বহন করতে সক্ষম।
সেন্টার ফর এয়ার পাওয়ার স্টাডিজ-এর ডিরেক্টর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল কে কে নোহ্ওয়ার বলেছেন, ‘‘এই এলসিএইচ এখনই সব অস্ত্র বহন করতে পারবে না। তবে অস্ত্রসামগ্রী বহনের জন্য তৈরি করার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেই এর কার্যকারিতা বোঝা যাবে।
আরও পড়ুন: ফেসবুক পোস্ট ঘিরে রণক্ষেত্র বেঙ্গালুরু, দফায় দফায় সংঘর্ষ, পুলিশের গুলিতে হত ৩
অন্য দিকে এই বছরের শেষেই আরও ১৫টি এই লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টারের বরাত পেতে পারে হ্যাল। তার মধ্যে ১০টি বায়ুসেনার জন্য এবং পাঁচটি সেনাবাহিনীর জন্য। হ্যালও জানিয়েছে, এই দু’টি এলসিএইচ প্রোটোটাইপ। পরের ধাপে হেলিকপ্টারগুলি পূর্ণ অস্ত্রবহনের ক্ষমতা নিয়েই তৈরি করা হবে। আবার ৯ অগস্ট ১০১টি প্রতিরক্ষা সামগ্রী আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক। এ বার সেই তালিকায় এই লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টারগুলিও ঢুকে যেতে পারে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল শিবির।