two finger test banned in india

ধর্ষণের প্রমাণ পেতে বিতর্কিত পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞা জারি করল সুপ্রিম কোর্ট

ধর্ষিতার দু’আঙুলের পরীক্ষা (টু ফিঙ্গার টেস্ট) করানোর নিয়ম চালু ছিল দীর্ঘ দিন। তবে ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই পরীক্ষাকে অবৈজ্ঞানিক এবং নারীর মর্যাদাহানিকর বলে মন্তব্য করেছিল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২২ ১২:২৩
Share:

সুপ্রিম কোর্ট অবৈজ্ঞানিক বললেও এই পরীক্ষা চালু রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

ধর্ষণের প্রমাণ পেতে ধর্ষিতার দু’আঙুলের পরীক্ষা (টু ফিঙ্গার টেস্ট) করানো যাবে না বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এ ব্যাপারে দেশের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালকে অবহিত করতে বলার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মেডিক্যাল পরীক্ষার পাঠ্যক্রম থেকেও এই সংক্রান্ত পাঠের বিষয় সরাতে হবে।

Advertisement

সোমবার এ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চে। সেখানেই ধর্ষিতার দু’আঙুলের পরীক্ষা (টু ফিঙ্গার টেস্ট) করানোর মনোভাবকে সমাজের ‘পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের প্রকাশ’, বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। তার পরই আদালত জানিয়ে দেয়, এই ধরনের পরীক্ষা কোনও ভাবেই একজন ধর্ষিতার উপর করানো যাবে না। যদি কেউ এই পরীক্ষা করেন, তবে তাঁকে অসদাচরণের দায়ে পড়তে হবে।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। দেশে যে এখনও এই ধরনের পরীক্ষার চল রয়েছে, সে ব্যাপারে আক্ষেপ করে আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘‘এই পরীক্ষা অবৈজ্ঞানিক তো বটেই, পাশাপাশিই আমাদের সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচয় দেয়। এই পরীক্ষা একটি সম্পূর্ণ ভুল মনোভাবকে মান্যতা দেয়, যা বলে, যৌনজীবনে সক্রিয় কোনও নারীকে ধর্ষণ করা যায় না।’’

Advertisement

ধর্ষণের পরীক্ষা হিসেবে টু ফিঙ্গার টেস্টকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল দশ বছর আগে। ২০১২ সালে দিল্লিতে নির্ভয়া-কাণ্ডের পরের বছরই সুপ্রিম কোর্ট দু’আঙুলের পরীক্ষাকে মহিলাদের জন্য মর্যাদাহানিকর বলে মন্তব্য করে। তারপরও অবশ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্ষিতাকে এই ধরনের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে বলে জানিয়ে আদালত সোমবার বলে, ‘‘এক জন ধর্ষিতাকে যখন এই পরীক্ষা করানো হয় তিনি নিশ্চিত ভাবেই আরও একবার একই মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যান। একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণার উপর দাঁড়িয়ে তাঁকে ওই যন্ত্রণা দেওয়া অর্থহীন।’’

ধর্ষিতার উপর দু’আঙুলের পরীক্ষা (টু ফিঙ্গার টেস্ট) আসলে সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের প্রকাশ, বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের পরীক্ষা যাতে কোনও ভাবেই এক জন ধর্ষিতার উপর করানো না হয়, সোমবার তা নিশ্চিত করতে বলেছে আদালত। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, যদি কেউ এই ধরনের পরীক্ষা করেন, তবে অসদাচরণের দায়ে পড়তে হবে তাঁকে।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ এই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকার এবং সমস্ত রাজ্য সরকারকে এই সংক্রান্ত গাইডলাইন মেনে চলতে বলেছে। একই সঙ্গে সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালকে এই নির্দেশিকার ব্যাপারে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement