কাশ্মীরী মেয়েদের বিয়ে করে মহাবিপদে পড়েছেন বিহারের দুই ভাই। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
৩৭০ ধারা রদ নিয়ে যখন সারা দেশ উত্তাল, তখনই ‘সুযোগের’ সদ্ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কাশ্মীরেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন বিহারের বাসিন্দা দুই ভাই তাবরেজ ও পারওয়েজ। ‘কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করার সুযোগ’-কে কাজে লাগাতেই একই পরিবারের দুই মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন এই দুই ভাই। আপাতত তারই মাসুল গুণছেন বিহারের রামবিসনপুর গ্রামের এই দুই ভাই। বিয়ের পরে ২৫ দিনও কাটল না, পুলিশ আটক করল চারজনকেই।
বিহারের সুপৌলের রামবিসনপুর গ্রামের বাসিন্দা দুই ভাই মহম্মদ তবরেজ ও মহম্মদ পারওয়েজ রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে গিয়েছিল কাশ্মীরে বছর চারেক আগে। সেখানকার রম্বন এলাকায় দুই বোনের প্রেমে পড়েন এই তবরেজ ও পারওয়েজ। ৩৭০ ধারা রদ হওয়ায় তাঁরা অবিলম্বে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। বিয়ের পরে গ্রামে ফিরে আসেন তাঁরা সস্ত্রীক। কিন্তু এই বিয়ে মেনে নেয়নি মেয়ে দু’টির পরিবার। বাড়ির মেয়েদের অপহরণের অভিযোগ নিয়ে কাশ্মীরের নাগমা বনিহল থানার পুলিশের দারস্থ হন তাঁদের বাবা। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ।
আরও পড়ুন:চলন্ত ট্রেন আর প্ল্যাটফর্মের খাঁজে আটকে যাত্রী! দেখুন তার পর কী হল
আরও পড়ুন:ফের পাকিস্তানে জোর করে ধর্মান্তর, শিখ তরুণীকে অপহরণ করে বিয়ের অভিযোগ
কাশ্মীর পুলিশের একটি দল সাব-ইনস্পেকটর সমীরের নেতৃত্বে বুধবার পৌঁছয় বিহারের সুপাৌলে। এর পরে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় এই দলটি রামবিসনপুরের বাড়ি থেকে তাবরেজ ও পারওয়েজকে আটক করে। বুধবারই তাঁদের সুপৌল কোর্টে তোলা হয়। বয়ান নথিভুক্ত করা হয় ওই দুই বোনেরও। আদালতে ওই দুই বোন জানান, তাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক। নিজেদের ইচ্ছেতেই তাঁরা তাবরেজ ও পারওয়েজকে বিবাহ করেছে। সমস্তটা শুনে আদালত কাশ্মীর পুলিশকে এই চারজনকেই ট্রানজিট রিমান্ডে কাশ্মীর নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়।
ধৃত দুই ভাই তবরেজ ও পারওয়েজের পরিবার থেকে জানানো হচ্ছে, এই দুই ভাই চার বছর আগে কাশ্মীরে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে গিয়েছিল। সেখানেই প্রেমের বন্ধনে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণেই এতদিন বিয়ে করতে পারেননি। ৩৭০ ধারা কেন্দ্র প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিলেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তাঁরা। তবরেজ আহমেদ বলছেন, ‘‘৩৭০ ধারা রদ হতেই আমরা জানতে পারি, এবার থেকে যে কেউ কাশ্মীরের মেয়েকে বিয়ে করে কাশ্মীরেই পাকাপাকি ভাবে থাকতে পারবে। আমরা তখনই মুসলিম রীতি অনুসারে নিকাহ করি।’’ তবরেজ ও পারওয়েজ বিশ্বাস করেন, অচিরেই এই জটিলতা দূর হয়ে যাবে।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার সমীর জানাচ্ছেন, ‘‘বিষয়টি এখন কোর্টের অধীনে। কাশ্মীরের আদালত এই চারজনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।’’